উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাঙালি মেয়েদের সৌন্দর্যে নমনীয়তা আর স্নিগ্ধতা যোগ করার এক এবং একমাত্র পথই হল শাড়ি। সরস্বতীপুজো থেকে দুর্গাপুজো, ২৫ শে বৈশাখ হোক বা পাত্রী বাছাই , শাড়িই আমাদের প্রথম পছন্দ। মায়ের শাড়ি পরে বড় হয়ে ওঠা মেয়েটি যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসে তখনও সেই শাড়িই থাকে অঙ্গে, যদিও অবাঙালি পরিধানও অঙ্গে ওঠে আমাদের কিন্তু তাও শাড়িই আমাদের প্রথম প্রেম। এহেন শাড়িকে কেমন করে দিনের পর দিন রাখবেন নতুন ও আকর্ষণীয় আজকের আলোচনা তাই নিয়ে…
১) প্রথমেই আসে সুতির শাড়ির নাম, শীতে-বসন্তে পালাপার্বণে যার কোনই জুড়ি নেই। রোজকার জীবনে এখন মা-মাসি-দিদারা ছাড়া আর বোধহয় সদ্য বিবাহিতারাই পরেন। ফেরতা দিয়ে বা কুঁচি করে যেভাবেই পরা হোক ভালো লাগে দেখতে। একে নতুনের মতো মড়মড়ে রাখতে গেলে ৭ দিনে ১-২ দিন খৈ বা সাবু নাহলে ভাতের মাড় দিয়ে ভালো করে শুকিয়ে ইস্ত্রী করে নিলে অনেক দিন নতুন থাকে, তবে কড়া রোদে শাড়ি মেলে রাখবেন না, রং জ্বলে যাবে।
২) এরপর তাঁতের শাড়ীর পালা। উৎসব অনুষ্ঠানেই এটা পরা হয় এবং কম বয়সীরা পরতে চায়না মোটেই, কিন্তু সুন্দর করে গুছিয়ে পরলে এর আবেদনের কাছে বাকিরা প্রায় নস্যি। এই শাড়িপরার পর খোলা হাওয়ায় মেলে রেখে ঘাম শুকিয়ে পাটপাট করে শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে খবরের কাগজ রাখুন, শাড়িতে গন্ধ হবেনা, নরম হবেনা, বহুদিন নতুনের মতো থাকবে। যদি ধুতে হয় তাহলে জরি পাড়ের শাড়ি বাড়িতে ধোবেন না, লণ্ড্রীতে দিন ,আর সুতোর পাড় হলে বাড়ীতেই ধুয়ে কলপ দিয়ে লণ্ড্রীতে ইস্ত্রী করতে পাঠান, বাড়ীতে এনে আধঘণ্টা রোদে দিয়ে ভাঁজ করে আলমারিতে তুলে রাখুন।
৩) সিল্কের শাড়ি, তসর, জামদানী, হ্যাণ্ডলুম, বেনারসী – কাঞ্জিভরম , বালুচরি, স্বর্ণচরি,অসম সিল্ক, মেখলার জন্যও একই নিয়ম, ঘনঘন ধুলে এর স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হবে এবং আয়ুষ্কাল কমবে। তাই অবশ্যই ব্যবহারের পর রোদ দেখিয়ে পেপারে মুড়ে রাখবেন নইলে ভাঁজে ভাঁজে কেটে যাবে , স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থাকবে , অনুজ্জ্বল হয়ে যাবে । মনে রাখতে হবে পারফিউম যেন সরাসরি জরিতে না লাগে তাহলে কালো হয়ে যাবে, মেকআপ বা খাবার পড়লে সাথেসাথে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছতে হবে এবং শুকিয়ে নিতে হবে, পরে লণ্ড্রীতে দিতে হবে।
৪) শাড়ির যত সৌন্দর্য সব কিন্তু ব্লাউজের ওপর নির্ভর করে। সিল্কের বা সেটের ব্লাউজ হলে কখনই বগলে বডি স্প্রে বা পারফিউম লাগাবেন না , এতে ব্লাউজে দাগ বসে যাবে, উঠবে না, বিশ্রী লাগবে পরবর্তীতে পরতে। তার চেয়ে কব্জিতে, হাঁটুর ভাঁজে, কানের পেছনে সুগন্ধি লাগান; আপনাকে ঘিরে থাকবে এর খোশবাই।
৫) লটকন বিশেষ জরুরী ব্লাউজের জন্য, এই লটকনের রং যাতে ঠিক থাকে ঘেমে গিয়ে দাগ না ফেলে ব্লাউজে তার জন্য পেপারে মুড়িয়ে রাখুন লটকন গুলোকে।
৬) ব্লাউজের হুকে অনেক সময় জং পড়ে, এর থেকে বাঁচতে রোদে দিন , ফেস টাওয়েলে স্যানিটাইজার নিয়ে আস্তে আস্তে ঘষুন হুকের ওপর জং উঠে যাবে , ভালো করে মুছে রোদ লাগিয়ে তবেই আলমারিতে রাখবেন।
৭) সুতির ব্লাউজ গরম আর বর্ষাকালে অবশ্যই ধুতে হবে, সিল্কের ব্লাউজ ফ্যানের হাওয়ায় শুকিয়ে নিতে হবে।
৮) শাড়ি পিন করার সময় একটা কাগজের টুকরো ব্লাউজের নীচে দিয়ে পিন করলে টান লেগে ছেঁড়ার ভয় থাকে না।
৯) নব্য শাড়ি পরিহিতারা প্রচুর পিন আটকে শাড়ি পরেন, তাদের বলি এতো চিন্তার কিছুই নেই, সায়া-কুঁচি-ব্লাউজ ভালো করে পরলেই বেশি পিনের দরকার হবে না।
১০) সবশেষে বলি সুন্দর সাজের সঙ্গে মাথায় ফুল লাগাতে সবাই ভালবাসেন, এই ফুলের টুকরো অংশ পড়ে থেঁৎলেও অনেক সময় দাগ হয়ে যায় ব্লাউজে, তাই কৃত্রিম ফুল ব্যবহার করাই ভালো। একান্তই ব্যবহার করতে হলে ভালো করে কাঁটা-ক্লিপ দিয়ে আটকে নেবেন।