নয়াদিল্লি : ভারতে করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতায় লকডাউনের কারনেই রাশ টানা সম্ভব হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের দাবি, লকডাউন ও অন্যান্য বিধিনিষেধ থাকায় সংক্রমণ এই কদিনে যতটা ছড়াতে পারত, ততটা ছড়ায়নি। পরিসংখ্যান দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রক দেখিয়েছে, লকডাউন না থাকলে এতদিনে করোনা রোগীর সংখ্যা দেশে কয়েক লক্ষ বেড়ে যেতে পারত।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯০৯ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে ভারতে। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী,রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩৫৬। কোভিড ১৯ সংক্রমণে দেশে মৃতের সংখ্যা ২৭৩ এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭১৬ জন। অর্থাৎ এই মুহূর্তে দেশে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৭৩৬৭।
প্রথম থেকে দেশে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ১৭৬১। মৃতের সংখ্যার বিচারেও দেশের অন্য রাজ্যগুলির তুলনায় মহারাষ্ট্রে এগিয়ে রয়েছে (১২৭)। এরপরে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। রাজধানী দিল্লিতে ১০৬৯ জন এপর্যন্ত আক্রান্ত হলেও, মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ জন।
গুজরাতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩২। তার মধ্যে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তামিলনাড়ুতে আক্রান্ত ৯৬৯ জন, মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। রাজস্থানে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ৭০০ ও ৩। তেলেঙ্গানায় সংখ্যা দুটি যথাক্রমে ৫০৪ ও ৯। পঞ্জাবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ১৫১ ও ১১। কিছুটা ব্যতিক্রমী ছবি ধরা পড়েছে সিকিম, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে। সেখানে এখনও পর্যন্ত কোনও করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি। অরুণাচল প্রদেশে অবশ্য একজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রবিবার সকালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৪। মৃতের সংখ্যা ৫। সুস্থ হয়েছেন ১৯ জন। অবশ্য শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় জানান, রাজ্য়ে নতুন করে করোনা আক্রান্ত ৬ জন। অর্থাত্ রাজ্য়ে করোনা আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ৯৫।
ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও এই পরিস্থিতি অস্বাভাবিক নয় বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দাবি। লকডাউন ও অন্যান্য বিধিনিষেধ চালু না থাকলে এতদিনে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ছাড়াত বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওযাল বলেন, ২২ মার্চ জনতা কার্ফিউ হয়েছিল। ২৫ মার্চ থেকে আমাদের দেশে লকডাউন চলছে। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, লকডাউন ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক নিষেধাজ্ঞা না থাকলে এতদিনে সংক্রামিতের সংখ্যা ২ লক্ষের বেশি হত। ১৫ এপ্রিলে গিয়ে সংখ্যাটা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেত। সেই হিসেবে দেখলে, আমরা এই সংক্রমণ রুখতে অনেকটাই সফল হয়েছি।