তুফানগঞ্জ: গত দু’দিনের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে তুফানগঞ্জ-১ ব্লকে এক হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ৮০০ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হত। বুধবার রাতে প্রায় ঘন্টাখানেক চলে শিলাবৃষ্টি। ক্ষতি হয় ধান, পাট, সব্জীর। বৃহস্পতিবারে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ভূট্টা গাছের বেশ ক্ষতি হয়। ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা ভেঙ্গে পড়েন। তারা জানান, সরকারী সাহায্য না পেলে এই ক্ষতি অপূরনীয়। ক্ষতি পরিমান জানতে মাঠে নামে তুফানগঞ্জ-১ ব্লক কৃষি দপ্তর। ভূট্টা চাষীদের ফসল বীমা করানো হয়েছে। তাদের জন্য টোল ফ্রী নম্বর চালু করা হল তুফানগঞ্জে। এই নম্বরে নাম নথিভূক্ত করালে তবেই পাওয়া যাবে শষ্য বীমার মুনাফা। লকডাউনে অফিস বন্ধ থাকলেও নিজের মোবাইল থেকেই করা যাবে এই কাজ। শুক্রবার এ কথা জানান তুফানগঞ্জ-১ ব্লক কৃষি আধিকারিক ঋতম সাহা। তিনি জানান, টোল ফ্রী নম্বরের পাশাপাশি বীমা কোম্পানীর তরফে আরও দু’ভাবে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। পদ্ধতি মেনে যারা নাম নথিভূক্ত করাবে তারাই কৃষিবীমার টাকা পাবেন। তাই সকল কৃষকদের ঐ নম্বর গুলিতে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট গ্রামপঞ্চায়েত অফিসের সাহায্যও নেওয়া যাবে।
অন্যদিকে, কালচিনির চা বলয়ে সন্ধ্যায় ১৫ মিনিটের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে ব্লকের বিচ চা বাগানে। স্কুল লাইনের একটি প্রাইমারি স্কুলের রান্না ঘরে বড় শিরিষ গাছ উপড়ে পড়ায় ঘরটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। বাগানের মুন্সি লাইনে একটি প্রাচীন শিব মন্দিরে গাছ উপড়ে শিব মন্দিরের একাংশ ভেঙ্গে পড়ে। ওই লাইনের বুইয়া লোহারের ঘর, সিদ্দিকী লাইনের বাবলি খাতুনের ঘর সহ একাধিক ঘর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হসপিটাল লাইনের একটি ছায়াগাছ উপড়ে বিদ্যতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে। ব্লকের ডিমা চা বাগান ফ্যাক্টরির প্রায় ২০০ মিটার সীমানাপ্রাচীর ভেঙ্গে পড়ে। বাগানের শ্রমিক আবাসন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেন্দাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মন্থরাম এলাকায় বিজয় নার্জিনারির দোকানে আগুন লেগে দোকানটি সম্পূর্ণ ভষ্মিভুত হয়েছে। হাসিমারা ও ফালাকাটা দমকল কেন্দ্রের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রাথমিক অনুমান ঝড়ে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। ভাটপাড়া চা বাগানের একটি গাছে আগুন লাগে। হাসিমারা দমকল কেন্দ্রের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়। যদিও দমকল বিভাগ জানিয়েছে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে গাছটিতে আগুন লাগিয়েছে। হ্যামিল্টনগঞ্জের ফরোয়ার্ড নগরে একটি নারকেল গাছে আগুন লাগে। এছাড়াও হাসিমারা সহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কালচিনির বিডিও ভূষণ শেরপা বলেন, ব্লকের প্রতিটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতকে ১০০ টি করে প্লাস্টিক সিট দেওয়া আছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা পঞ্জায়েতের মাধ্যমে সেগুলো নিতে পারবেন।