গয়েরকাটা : সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ধূপগুড়ি ব্লকের শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জঙ্গল লাগোয়া নোনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালি ও পাথর তোলা হচ্ছে। সংস্কার ফাঁকি দিয়ে এই বালি-পাথর পাচার হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। বালি মাফিয়ারা এভাবে প্রকাশ্যে কারবার চালানোয় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে
দুরামারি থেকে ৩ কিমি দূরে নোনাই নদীগর্ভ থেকে আইন ভেঙে এই বালি তোলার কাজ শুরু হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে। তাঁদের আশঙ্কা, মোরাঘাট জঙ্গল লাগোয়া এই নদী থেকে এভাবে বালি-পাথর উত্তোলন চলতে থাকলে তা এলাকার বাস্তুতন্ত্র নষ্ট করবে। তবে শুধু নোনাই নয়, বানারহাট ও ধূপগুড়ির একাধিক জঙ্গল লাগোয়া নদী থেকে এভাবেই দিনের আলোয় চলছে বালি-পাথর লুঠ। নদীতে ট্র্যাক্টর নামিয়ে বালি তোলার কাজ চলছে। এর আগেও এই নোনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালি ও পাথর তোলার অভিযোগ উঠছিল। কিন্তু প্রশাসনিক অভিযানের কারণে কিছু দিন বালি তোলার কাজ বন্ধ ছিল। এখন আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বালি মাফিয়ারা। সূত্রের খবর, নোনাই থেকে বালি-পাথর তুলে এলাকার কিছু বাড়িতে প্রথমে তা মজুত করা হচ্ছে। পরে সুযোগ বুঝে ট্রাক বা ট্র্যাক্টরে তা গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর এই বালি-পাথর নিয়ে মোরাঘাটের জঙ্গল ভেদ করে ও দুর্বল সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করছে প্রচুর ট্রাক। ফলে দুর্বল সেতুর অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নদী ও সমাজ বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা নদীকে মা বলে মনে করি। অথচ নদী রক্ষার জন্য কেউ এগিয়ে আসি না। ব্লক প্রশাসনের ভূমিকাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন ও মানুষ সবাই নদী বাঁচাতে এগিয়ে না এলে একদিন আমরা সবাই এর ফল বুঝতে পারব। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ধ্বংস হবে জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র। বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুলিশ প্রশাসনকে এবং জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসককে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে। বেআইনিভাবে বালি পাচার আর নদী থেকে সংস্কার ছাড়া বালি তোলা বন্ধের ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই এইসব বরদাস্ত করা হবে না। বনাধিকারিকদেরও বলা হয়েছে জঙ্গল লাগোয়া নদী থেকে বালি তোলা বন্ধে পদক্ষেপ করতে। ধূপগুড়ি ব্লক ভমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, আমরা প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন নদীতে হানা দিয়ে প্রচুর বালি-পাথর বোঝাই ট্রাক বাজেয়াপ্ত করি। নোনাই নদী নিয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।