রাজশ্রী প্রসাদ, পুরাতন মালদা : রাজ্য সরকারের নির্দেশে সিল করে দেওয়া হয়েছে জেলার সীমানা। চেকপোস্টগুলিতে চলছে নাকা চেকিং। অথচ সেই নাকা চেকিং এড়িয়ে লরিতে করে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গোপনে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া আসা চলছে। ঢিলেঢালা পুলিশি নজরদারির এমনই ছবি ধরা পড়ল বৃহস্পতিবার। এদিন লরিতে করে লুকিয়ে যাওয়ার পথে ধরা পড়ে গেলেন ভিনরাজ্য থেকে আসা ১৫ জন শ্রমিক। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নজরে প্রথমে বিষয়টি আসে। পরে মালদা থানার পুলিশ তাঁদের সাহাপুর হাইস্কুলে সরকারি কোয়ারান্টিন সেন্টারে নিয়ে য়ায়।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। ভিনদেশ ও ভিনরাজ্য থেকে ফিরে যাতে সকলে কোয়ারান্টিন সেন্টারে থাকেন, সেই নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, নার্সিংহোম এবং সরকারি ভবনকে এ ধরনের সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। ভিনরাজ্যের শ্রমিকদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে জেলায় জেলায় নাকা চেকিং শুরু হয়েছে। অথচ সেই বজ্র আঁটুনির ফোকর গলেই শ্রমিক পরিবহণ চলছে। এমনই ছবি ধরা পড়ল বৃহস্পতিবার। এদিন বিকেল চারটে নাগাদ পুরাতন মালদার নির্মীয়মাণ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাসে মাধাইপুর মোড়ের কাছে একটি লরি থেকে তেরোজন শ্রমিককে নামতে দেখা যায়। ওই সময় কর্তব্যরত সাংবাদিকদের বিষয়টি নজরে আসে।
সাংবাদিকদের দেখেই শ্রমিকদের নামিয়ে পালিয়ে যায় লরিটি। দুজন শ্রমিকও মাঠ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। তবে ১১ জন শ্রমিক দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁদের জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, তাঁরা সকলেই দক্ষিণ ২৪ পরগণার মথুরাপুরের বাসিন্দা। কাজের জন্য ভিনরাজ্য গিয়েছিলেন। তাঁরা ডালখোলা থেকে একটি লরিতে চেপে গোপনে আসছিলেন। পথে বেশ কয়েকটি নাকা চেকিং থাকলেও কীভাবে সেগুলির প্রহরা এড়িয়ে তাঁরা এতদূর এলেন, তা নিয়ে অবশ্য কেউ মুখ খোলেননি। সাংবাদিকরা বিষয়টি মালদা থানায় জানালে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাঁদের সাহাপুর হাইস্কুলের কোয়ারান্টিন সেন্টারে নিয়ে যায় পুলিশ। রাস্তায় থাকা ভিনরাজ্যের আরও ৪ শ্রমিককে সেখানে নিয়ে যায় পুলিশ।
এমন ঘটনায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, নাকা চেকিং এড়িয়ে কীভাবে লরিতে করে শ্রমিকদের পরিবহণ হচ্ছিল? যেখানে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা ও পণ্য বহনকারী যানবাহন চলাচলে ছাড় রয়েছে, সেখানে এমন ঘটনা ঘটছে কীভাবে? এদিকে, বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সাহাপুর হাইস্কুলের মোট ৪৩ জন ভিনরাজ্যের শ্রমিককে রাখা হয়েছে।