সানি সরকার, শিলিগুড়ি: দুর্দিনে ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রে ভরসা জোগাচ্ছে ইন্ডিয়া পোস্ট। করোনা মোকাবিলায় কোভিড-১৯ হাসপাতালগুলিতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া তো বটেই, জরুরিভিত্তিতে বাড়ি বাড়ি জীবনদায়ী ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে উদ্যোগী হয়েছে ডাকঘর। যার জন্য খোলা হয়েছে বিশেষ মেডিসিন ইউনিট।
শিলিগুড়ি প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার রতন সরকার বলেন, দেশের প্রত্যেকটি মানুষকে লড়াই করতে হচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে। এই লড়াইয়ে ডাককর্মীরাও যুক্ত। তাই সরকারের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকার চেষ্টাও করছি আমরা। যতটা সম্ভব পৌঁছে দেওযা হচ্ছে ওষুধ। এমন ডাক পরিষেবার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য।
করোনার জেরে দেশজুড়ে লকডাউন। স্বাভাবিকভাবে সমস্ত পরিবহণ বন্ধ। যার প্রভাব পড়েছে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রেও। ফলে অনেক জাযগায় ওষুধ পাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন রোগী ও তাঁর পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়িয়েছে ইন্ডিযা পোস্ট। দেশে লকডাউন হতেই কোভিড-১৯ হাসপাতালগুলিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন ডাককর্মীরা। একইসঙ্গে ডাক পরিষেবায় যুক্ত করা হয়েছে পার্সোনাল মেডিসিন ডেলিভারি পরিষেবা। ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে কয়েকদিন ধরে কোভিড-১৯ হাসপাতালের পাশাপাশি সাধারণ হাসপাতালগুলিতেও প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যেমন কার্সিযাং হাসপাতালের পাশাপাশি এই পরিষেবা পেয়েছে রাজ্য সরকার অধিগৃহীত কোভিড-১৯ হাসপাতালগুলি। ডাকঘরের এই পরিষেবার সুবিধা নিচ্ছে নার্সিংহোমগুলিও।
এই পরিষেবার সুফল যাতে সাধারণ মানুষ পেতে পারেন, তারজন্য উদ্যোগ নিয়েছে ডাক কর্তপক্ষ। ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও প্রান্তে সাধারণ মানুষ ওষুধ পাঠাতে পারেন। তার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে স্থানীয় ডাকঘরে গিয়ে জানাতে হবে তিনি ওষুধ পাঠাতে চান এবং পার্সেলের ওপর লিখতে হবে মেডিসিন বুকিং। ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই এই পদ্ধতি বলে জানান ডাক কর্তারা। জানা গিয়েছে, কোনও অবস্থাতেই যাতে ওষুধ ডাকঘরে পড়ে না থাকে, তার জন্য বুকিং হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা কপি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে রিজিওনাল ডাকঘরে। ইন্ডিয়া পোস্ট-এর কর্তা বলেন, ওষুধ জীবনদায়ী। তাই এই ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দু-দিনের মধ্যে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা থাকে আমাদের। এই পরিষেবা কলকাতা থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত পাওয়া যাবে।
লকডাউন পরিস্থিতিতে বাড়ি গিয়ে পেনশনের ডাকাও পৌঁছে দিচ্ছেন ডাককর্মীরা। ব্যাংক গ্রাহকদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার জন্য সোমবার থেকে বিভিন্ন জায়গায় ইন্ডিয়া পোস্ট শিবিরও করছে।