অভিষেক ঘোষ, মালবাজার : দেশ তথা রাজ্যের ভৌগোলিক মানচিত্রে জ্বলজ্বল করছে নামগুলি। পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে যথেষ্ট সুনামও রয়েছে। কিন্তু দেশের মোবাইল বা টেলি যোগাযোগের মানচিত্রে ঠাঁই নেই তাদের। ভারত-ভুটান সীমান্তবর্তী ডুয়ার্সের তোদে, তাংতা, গোদাক, বিন্দু, চিসাং, ঝালং আমাদের দেশ ও রাজ্যের অংশ হলেও এসব পাহাড়ি গ্রামে কাজ করে না ভারতীয় কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক। বিএসএনএল-এর নেটওয়ার্ক মাঝেমধ্যে এলেও বাকি বেসরকারি সংস্থার নেটওয়ার্ক ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ভুটানের সিম কার্ড। ৫০০ টাকা দিলেই হাতের নাগালে মিলছে ভুটানের সিম কার্ড। যা নিতে গেলে প্রয়োজন হয় না কোনো পরিচয়পত্রের।
উত্তরবঙ্গে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে ঝালং, বিন্দু, চিসাংয়ে কিন্তু ডুয়ার্সের এইসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা জায়গায় পৌঁছে মোবাইলের নেটওয়ার্ক না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পর্যটকদের। বাধ্য হয়ে অনেকেই কিনে নিচ্ছেন ভুটানের সিম। তবে শুধু পর্যটকরা নন, ভুটান সীমান্তে প্রহরারত সশস্ত্র সীমা বলের জওয়ানদেরও মোবাইলে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই বেসরকারি সংস্থার মোবাইল টাওয়ার নেই। থাকে না বিএসএনএল-এর সিগন্যালও। চিসাংয়ে কলকাতা থেকে আসা দুই পর্যটক অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিলাজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পাহাড়ে ঘুরতে সবার ভালো লাগে। তবে ঘুরতে এসে যদি মোবাইলে নেটওয়ার্ক না থাকে, আর সঙ্গে ফেসবুকে যদি ভালো ছবি পোস্ট না করতে পারি, তবে মনটা খারাপ হয়ে যায়। এখানে আসার পর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগই করতে পারিনি। চিসাংয়ের এক হোমস্টের কর্ণধার অ্যান্ড্রুনিকাস রাই বলেন, ভারতে থাকি। কিন্তু নিজের দেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারি না। তাই পর্যটকদের কথা ভেবে বাধ্য হয়ে ভুটানের সিম কার্ড ব্যবহার করতে হয়। সরকার এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক। মালবাজার শহরের পর্যটন ব্যবসায়ী রাজেন প্রধান বলেন, মাঝেমধ্যেই নেটওয়ার্ক চলে যায় ভুটান সীমান্তের গ্রামে। তাই ইনটারনেট পরিসেবা চালু রাখতে অনেকেই ভুটানের সিম ব্যবহার করেন। এ বিষযে কালিম্পংয়ের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, মোবাইলে নেটওয়ার্ক সমস্যা নিযে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বেসরকারি পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করেছি। সম্ভবত খুব শীঘ্রই গরুবাথান ব্লকের ভুটান সীমান্তে মোবাইল পরিসেবা স্বাভাবিক হবে।