কলকাতা: কৃষক বিল ইস্যুতে সংসদের আবহ ইতিমধ্যেই গরমাগরম হয়ে উঠেছে। গর্জে উঠেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পাল্টা সংঘাতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যপাল খোদ।
জানা গিয়েছে, সংসদে সদ্য পাশ হয়েছে কৃষি বিল। সেই বিলকে ‘কৃষক বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্বর জোরাল করেছে তৃণমূল। এরপরই ‘কৃষিপণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন বিল’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দামে সুরক্ষা ও কৃষক ক্ষমতায়ন এবং চুক্তি সংক্রান্ত বিল’ নিয়ে রাজ্যসভায় বিক্ষোভ দেখিয়ে সাসপেন্ড হয়েছেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, দোলা সেন সহ ৮ জন সাংসদ। ঠিক সেই মুহূর্তেই আসরে নামলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরও।
এছাড়াও @MamataOfficial এর অকর্মণ্যতার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত ৩.৫ লক্ষ কোটির করোনা প্যাকেজের মধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকাও পায়নি পশ্চিমবঙ্গ।
আশা করব, মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়া পিএম-কিষাণের সুবিধা যাতে বাংলার চাষিরা পান সেজন্য পদক্ষেপ করবেন।(3/3)— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) September 22, 2020
এদিন রাজ্যপাল দাবি করে বলেন, দেশের সবকটি রাজ্যে কৃষকরা ‘পিএমকিসান’ (প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি) প্রকল্পের সুবিধা পেলেও পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদেরকে সেই টাকা পেতে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের ঘোষিত করোনা প্যাকেজের আওতায় যে টাকা প্রাপ্য ছিল, তাও পেতে দেওয়া হয়নি বাংলার চাষিদের।
উল্লেখ্য, পিএমকিসান সহ নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দূরে থাকা নিয়ে আগেও একাধিক বার ধনকর মুখ খুলেছেন। এ সব বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর চিঠিও এই প্রথম নয়। কিন্তু এ বারের চিঠিটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। যে সময়ে মোদী সরকারকে ‘কৃষক বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে পথ নামছে তৃণমূল, সেই সময়েই কৃষক ইস্যুতে মমতাকে চিঠি ধনকরের। সেই চিঠিতে মমতার সরকারকেই ‘কৃষক বিরোধী’ বলে তোপ দাগা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের ৭০ লক্ষ চাষি ৮৪০০ কোটি টাকার সুবিধা পেলেন না কেন @MamataOfficial?
পিএম-কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে কেন যোগ দিলেন না?
যোগ দিলে আজ প্রত্যেক চাষিভাইয়ের ব্যাঙ্কে ১২ হাজার টাকা জমা পড়ত।
মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়া আপনার কুমির কান্নায় চাষির দু:খ ঘুচবে না!!(1/3) pic.twitter.com/CjpU53SUg6— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) September 22, 2020
পাশাপাশি, এদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর তাঁর মাইক্রো ব্লগিং সাইটে লিখেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা রাজ্যের কৃষকদের পেতে দেওয়া হলে এত দিনে প্রত্যেক কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অন্তত ১২ হাজার টাকা করে জমা পড়ে যেত বলে রাজ্যপাল লিখেছেন। করোনাকালীন সহায়তা হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার যে সাড়ে ৩ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তার আওতায় প্রাপ্য ৩০ হাজার কোটি টাকাও পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা এখনও পায়নি মমতার ‘অকর্মণ্যতার’ জন্য। লিখেছেন ধনকর
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে রাজ্যপালের এই চিঠি আসলে বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেরই দাবি। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যখন কৃষকের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়ার অভিযোগ তুলছে তৃণমূল, তখনই মমতার সরকারকে ‘কৃষক বিরোধী’ আখ্যা দিচ্ছেন রাজ্যপাল। এটা সমাপতন হতে পারে না বলে বিশ্লেষকদের মত।