শুভঙ্কর চক্রবর্তী, জয়গাঁ: করোনা সংক্রমণ রুখতে দেরিতে হলেও ভুটান সীমান্ত জয়গাঁয় এবার মাঠে নামল জয়গাঁ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (জেডিএ)। মঙ্গলবার সংস্থার তরফে এবং দমকলের উদ্যোগে জয়গাঁ শহরকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। এদিন জেডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান মোহন শর্মার উপস্থিতিতে কাজটি পরিচালনা করা হয়।
শহরের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দলসিংপাড়া এলাকাও এদিন জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে বলে জানান জেডিএ আধিকারিকরা। করোনা সংক্রমণ রুখতে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকেই পদক্ষেপ করেছে ভুটান সরকার। সেখানে জেডিএ-র তরফে উদ্যোগ নিতে কেন এতটা দেরি হল তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে।
ইন্দো-ভুটান সীমান্তে অবস্থিত জয়গাঁ উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্যকেন্দ্র। জয়গাঁর ব্যবসা মূলত নির্ভরশীল ভুটানের উপর। দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি অনুসারে জয়গাঁ হয়েই চাল, ডাল, তেল, নুন বা বিভিন্ন শিল্পজাত দ্রব্য ভারত থেকে ভুটানে যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য ভুটানের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জয়গাঁয় আসেন। তবে করোনা আতঙ্কের জেরে কার্যত বন্ধ হয়েছে সেই যাতায়াত। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই ইন্দো-ভুটান সীমান্তের ফুন্টসোলিংয়ে মেডিকেল ক্যাম্প বসিয়ে দেশে ঢোকা প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছিল ভুটান সরকার। তারপর ৬ মার্চ নির্দেশিকা জারি করে সে দেশে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারপর থেকেই কোনও ভারতীয়দেরই ফুন্টসোলিংয়ের ওপারে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। ছাড়পত্র মিলছে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় কিছু পাইকারি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে। রাজ্য পুলিশ, এসএসবি এবং ভুটানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর যৌথ তদারকিতেই সেই সব পণ্য ঢুকছে ভুটানে।
বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আরও আগে থেকেই জয়গাঁয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ ছিল বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশ। জয়গাঁ থেকে বহু শ্রমিক প্রতিদিন কাজের খোঁজে ভুটানে যেতেন। সেইসব শ্রমিক মহল্লাগুলিতে শুধুমাত্র মাইকিং ছাড়া অন্য কোনও সচেতনতামূলক পদক্ষেপ করা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও এই বিষয়ে জেডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান মোহন শর্মা জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারেই তাঁরা কাজ করছেন। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে যেখানে যেমন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তেমনটাই করা হচ্ছে।