রায়গঞ্জ: আর তারা থাকতে চায় না কারাগারের অন্ধকার জীবনে। মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। কিন্তু ভয়ংকর অপরাধের জন্য আদালতের বিচারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারা। দীর্ঘ ১০ বছর, আবার কেউ ১২ বছর বা তারও বেশি কারাগারে থাকায় ধীরে ধীরে নিজেদের বদলে ফেলেছে। অপরাধপ্রবণতা ভুলে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনে ফেরার চেষ্টা করছে। সেই সব বন্দিদের আলোর পথ দেখাতে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জে(Raiganj) ২০১৬ সালে তৈরি হয় মুক্ত সংশোধনাগার। বর্তমানে এই সংশোধনাগারে রয়েছে ২৩ জন বন্দি। এদের অধিকাংশ খুন অথবা ধর্ষণের অপরাধে অভিযুক্ত। প্রায় ১২ বছর বা তার বেশি কারাগারে বন্দি থাকার পর সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ তাদের মুক্ত সংশোধনাগারে স্থানান্তরিত করেছে। করোনার আগে ভালোই কাটছিল তাদের। প্রত্যেকেই কোনও না কোনও কাজে যুক্ত থেকে উপার্জন করতেন। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা আসতেই সবটাই যেন পালটে যায়। কর্তৃপক্ষ তাদের প্যারোলে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। প্রায় ১৪ মাস বাড়ি কাটিয়ে আবার সংশোধনাগারে ফিরে এসেছে তারা।
পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও সেভাবে তাদের কাজ মিলছে না। বন্দিদের মধ্যে কেউ দর্জির কাজ, কেউ কাঠমিস্ত্রীর কাজ, আবার কেউ রাজমিস্ত্রীর জোগানের কাজ করেন। কয়েকজন আবার সংশোধনাগারের গেটে খাবারের দোকান, জেরক্সের দোকান চালায়। কাউকে টোটো চালাতে এবং সবজির দোকান করতেও দেখা যায়। বন্দিরা সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাইরে থাকতে পারেন। এই সময়ে তারা নানারকম কাজ করেন। যে আয় করেন তা দিয়ে নিজেদের খাবার, পোশাক পরিচ্ছদ ও ওষুধপত্রের খরচ তোলার পাশাপাশি বাড়িতে থাকা স্ত্রী-ছেলে মেয়েদের জন্য কিছু পাঠিয়ে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি কাজ কমে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। এই প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারের সুপারিন্টেন্ডন্ট রাজেশ কুমার মণ্ডল জানান, বন্দিরা কোভিড প্যারোল কাটিয়ে বাড়ি থেকে ফিরেছে। কোভিডের পর তাদের কাজ কিছুটা কমেছে, তবে অনেকেই কাজ করছে। কেউ নাসিংহোমে, কেউ মিষ্টির দোকানে আবার কেউ গেটের সামনে খাবারের দোকান দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ট্র্যাক্টর-ট্রলির মালিকদের আয় কমেছে, লাভ চাষিদের