কেরালা ব্লাস্টার্স – ১ (সিপোভিচ)
এসসি ইস্টবেঙ্গল – ০
ফাতোরদা : ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে মারিও রিভেরা বলেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও দলই খেলতে পছন্দ করবে না। জিততে সমস্যা হতে পারে বলে। ইংরেজিতে খুব সড়গড় না হওয়া মারিও সম্ভবত অন্যকথা বোঝাতে চেয়েছিলেন। অনেক দলই তাঁদের পছন্দ করছে না, নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করার জন্য। প্রথম চারের ওঠানামায় এসসি ইস্টবেঙ্গলই এখন ফ্যাক্টর।
সোমবারের ম্যাচের শুরুতে বেশ খারাপ খেলছিল কেরালা ব্লাস্টার্স। সম্ভবত করোনা সংক্রমনের জন্যই ইভান ভুকোমানোভিচের দলের ভারসাম্যটা একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে ছন্দে খেলছিল দলটা, সেই ধারাবাহিকতা একেবারে নেই। পেরেরা ডিয়াজ, সাহাল আদুল সামাদ, অ্যাড্রিয়ান লুনা বা আলভারো ভাসকুয়েজরা একেবারেই সেরা ফর্মে নেই। একইভাবে ডিফেন্সও ছিল বেশ নড়বড়ে। বিশেষকরে সন্দীপ সিং ওভারল্যাপে যতটা ভালো, ডিফেন্স করায় তেমন দক্ষ নন।
কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে এদিনের ম্যাচে ছিল প্রথম চারে ওঠার হাতছানি। কিন্তু প্রথমার্ধে বারবারই ফাইনাল থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলায় চাপ কমে যায় লাল হলুদ ডিফেন্সের উপর থেকে। এমনকি দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলটা পেয়ে যে দারুনকিছু খেলতে শুরু করেন জিকসন সিংরা, তাও নয়। ৪৯ মিনিটে এনেস সিপোভিচের গোলটা হল লালথাঙ্গার কর্ণারে মাথা ছুঁইয়ে। ম্যাচের সেরা অবশ্য হলেন পুইতিয়া।
তবে এদিন যে দল নামালেন মারিও, তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকা স্বাভাবিক। আদিল খানের গত কয়েক ম্যাচে যা পারফরমেন্স, তাতে তাঁর বাদ যাওয়ার মধ্যে যুক্তি থাকতে পারে। কিন্তু মার্সেলো রিভিয়েরা, ড্যারেন সিদোয়েল, নাওরেম মহেশ, লুয়াং আঙ্গুসানাসহ একাধিক পরিবর্তন। রাহুল পাসোয়ান বা নামতেকে জায়গা করে দিতে এঁদের বসাতে হচ্ছে, এটা মেনে নেওয়া কষ্টকর।
বিশেষকরে ইস্টবেঙ্গলের জেতাটাই গত দু-তিন বছরে যখন খবর, তখন এত পরীক্ষা কেন? শেষ কয়েক ম্যাচে নিয়মিত দুই বিদেশির পরিবর্তে ফ্রান সোতাকে প্রথম একাদশে রেখে শুরু করেন মারিও রিভেরা। তিনি এদিন চোখেই পড়লেন না, ম্যাচের শেষদিকে একটা সহজ সুযোগ নষ্ট করা ছাড়া। বরং রফিকরা নিজেদের সাধ্যমতো লড়লেন।
৪-৪-২ ছকে সামনে মহম্মদ রফিক ও রাহুল পাসোয়ানকে রেখে দল নামান মারিও। দুই স্ট্রাইকারের মধ্যে রফিককে বেশিরভাগ সময়ে নিজেদের অর্ধে নেমে আসতে হল দলকে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে। রাহুল পাসোয়ান নিশ্চিতভাবেই লাল হলুদ জার্সির ভার এদিন বুঝে গেলেন। ৪২ মিনিটে আন্তোনিও পেরোসেভিচ গোটা ব্লাস্টার্স ডিফেন্সকে টলিয়ে দিয়ে জমি ঘেঁষা যে বলটা রেখেছিলেন তাতে স্রেফ পা ছোঁয়াতে পারলেই তিনিও হয়ত আর একজন কিয়ান নাসিরি হতে পারতেন। তাঁর বদলে শুভ ঘোষ কেন আর একটু বেশি সময় পাবেন না, প্রশ্ন থাকেই।
পেরোসেভিচকে উইঙ্গার পজিসনে নিয়ে আসায় দলের আক্রমনে ধার বেড়েছে। এদিনের পারফরমেন্স দেখে মনে হয়েছে, তিনি স্ট্রাইকারের থেকেও অনেকবেশি কার্যকর এই পজিশনে। ৭০ মিনিটে তাঁর একটা দূরপাল্লা শট গোলে ঢোকার মুহূর্তে আটকে দেন প্রভুসুখান সিং গিল। এদিনের পর ২৬ পয়েন্ট নিয়ে কেরালা উঠে এল তিন নম্বরে। ইস্টবেঙ্গল যেখানে ছিল সেখানেই রইলো।