সাজাহান আলি, কুমারগঞ্জঃ ডাইনি সন্দেহে মাকে খুনের অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ থানার সাফানগর দক্ষিণ পাড়ার। ঘটনার পর থানায় আত্মসমর্পণ করে অভিযুক্ত ছেলে লখিরাম হেমরম (৪৫)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বৃদ্ধার নাম সতী হেমরম (৬৫)। সোমবার বাড়ির অদূরে সাফানগর আত্রেয়ী নদীর ধার থেকে ওই বৃদ্ধার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় দিনমজুর লখিরামের স্ত্রী নমি মার্ডি অসুখে ভুগছিলেন। প্রায় একমাস আগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান নমি মার্ডি। এই ঘটনার পর থেকে বিধবা মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলা বেধে থাকত লখিরামের। অভিযোগ, রবিবার গভীর রাতে মাকে বল্লম দিয়ে কুপিয়ে খুন করে লখিরাম। বৃদ্ধার মৃতদেহ এদিন বাড়ির অদূরে সাফানগর আত্রেয়ী নদীর ধার থেকে উদ্ধার হয়। পরে কুমারগঞ্জ থানায় গিয়ে নিজের মাকে খুনের কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে অভিযুক্ত ছেলে।
ডাউনি সন্দেহে ওই বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে বালুরঘাট থেকে কুমারগঞ্জ থানায় যান ডিএসপি উদয়কুমার তামাং। তিনি বলেন, ‘মাকে খুনের ঘটনায় থানায় আত্মসমর্পণ করেছে অভিযুক্ত ছেলে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
আদিবাসী সমাজ শিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (আসেকা) দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি রবি মার্ডি বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। আমাদের সংস্থা নিরলসভাবে সমাজের চেতনা বৃদ্ধি ও কুসংস্কার দূর করার জন্য কাজ করছে। তবে কুমারগঞ্জে আজকের ঘটনার পর ডাইনির মতো বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে আমাদের আরও জোরদারভাবে ময়দানে নামতে হবে।’
কুমারগঞ্জের বিডিও বলেন, ‘আমরা খুব শীঘ্রই কুসংস্কার ও ডাইনির মতো ভ্রান্ত বিষয়গুলিকে নিয়ে সচেতনতা অভিযান শুরু করব।’ কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা দলগতভাবে ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে লকডাউনের পরেই সাফানগর এলাকায় সচেতনতা অভিযান চালাব। মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর করতেই হবে।’