বালুরঘাট: শীঘ্রই বালুরঘাট(Balurghat) হিলি রেল প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের মূল্য নির্ধারণের জন্য সমীক্ষার কাজ শুরু করবে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার জেলাশাসকের দপ্তরের আত্রেয়ী সভাকক্ষে সমন্বয় বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে রেল ও জেলা প্রশাসন। বৈঠকে রেলের তরফে জেলা প্রশাসনের হাতে জমি অধিগ্রহণের জন্য সদ্য প্রকাশিত গেজেট নোটিফিকেশন তুলে দেওয়া হয়। চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তির নথি ওই বৈঠকে পেতেই জমিদাতাদের অবগতির জন্য বিজ্ঞাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
২০১০ সালে বালুরঘাট( থেকে হিলি পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ প্রকল্পের ঘোষণা হয়৷ প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ শেষও হয়৷ কিন্তু জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রকল্পটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে থমকে থাকে। গতবছর ওই প্রকল্পের বাস্তবায়নের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়৷ সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্ট দ্রুত ওই প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। এরপরই তড়িঘড়ি ওই প্রকল্পের কাজ শুরু করে রেল ও জেলা প্রশাসন। ১১ অক্টোবর জেলাশাসক উত্তরপূর্ব রেলের আধিকারিকের হাতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তির খসড়া তালিকা তুলে দেন। ২৫ অক্টোবর উত্তর-পূর্ব রেলের সদর দপ্তর থেকে চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে দ্য গেজেট অফ ইন্ডিয়ার দপ্তরে পাঠানো হয়৷ এরপর বুধবার রাতে দ্য গেজেট অফ ইন্ডিয়া চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
শুক্রবার জেলাশাসকের দপ্তরে আত্রেয়ী সভাকক্ষে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে উত্তর-পূর্ব রেলের কাটিহার ডিভিশনের নির্মাণ সংস্থার ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার জীতেন্দ্র কুমার ও দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণার উপস্থিতিতে সমন্বয় বৈঠকে বসেন ভূমি, কৃষি, বন, সেচ সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা। ওই বৈঠকে রেলের তরফে জেলাশাসকের হাতে গেজেট নোটিফিকেশন তুলে দেওয়া হয়। অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত হওয়ার পরে জমি থেকে আমন ধান উঠলে জমির মূল্য নির্ধারণ করতে সমীক্ষার কাজ শুরু হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি রেলের সেতু নির্মাণ সহ বাস্তবায়নের একাধিক বিষয়ে ছাড়পত্র নিয়ে আলোচনা করে সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়৷ কাটিহার ডিভিশনের নির্মাণ সংস্থার ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার জীতেন্দ্র কুমার বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি মুদ্রণের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। আমরা বিজ্ঞপ্তি হস্তান্তর করেছি। জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে নির্মাণ শুরু হয়ে যাবে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।’
জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ‘বালুরঘাট হিলি রেল প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গেজেট নোটিফিকেশন হয়েছে। এরপর জমি অধিগ্রহণের সমীক্ষা, মূল্য নির্ধারণ সহ বিভিন্ন স্তর রয়েছে। তারজন্য ভূমি, সমীক্ষক, ফরেস্ট, এগ্রিকালচার, জেলা পরিষদ, ন্যাশনাল হাইওয়ে ও রেল সহ বিভিন্ন দপ্তরকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। বৈঠকে সমীক্ষার কাজ শুরু, সেতু নির্মাণের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ধান কাটা হলেই ডিসেম্বর মাসে সমীক্ষার কাজ শুরু হবে। ক্ষতিগ্রস্ত জমিদাতাদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া করা হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করে রেলের কাছে জমি হস্তান্তর করার লক্ষ্য রয়েছে।’