কলকাতা : ঘটনার ঘনঘটা!
জমজমাট বিতর্কে উত্তাল বঙ্গ ক্রিকেট। যার রেশ হয়তো সুদূরপ্রসারী হতে চলেছে। সিএবি যুগ্মসচিব দেবব্রত দাস মাসখানেক আগে ঋদ্ধিমান সাহার দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সোমবার রাতের দিকে সিএবিতে বাংলার রনজি দল নির্বাচিত হয়েছে। সেই দলে ঋদ্ধিকে রাখা হয়েছে তাঁর সঙ্গে কোনও কথা না বলেই। অথচ, মহম্মদ সামির ক্ষেত্রে ঘটেছে উলটো ঘটনা। জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটারের জন্য কেন ভিন্ন নীতি? উত্তর নেই।
মঙ্গলবার পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে গিয়েছে। দুপুরের দিকে সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে ফোনে দীর্ঘসময় কথা হয়েছে পাপালির। বাংলা তথা দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার-ব্যাটার ঋদ্ধি তাঁর যাবতীয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তাঁর দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুবাদে তিনি বাংলা ছাড়ার ভাবনার কথাও জানিয়েছেন সিএবি সভাপতিকে। যদিও রাত পর্যন্ত সিএবিতে ঋদ্ধির আবেদন করা এনওসি জমা পড়েনি। অবশ্য মুম্বইয়ে থাকা ঋদ্ধির পক্ষে এখনই এনওসির আবেদন করা কঠিন।
সূত্রের খবর, প্রায় ১৫-১৬ বছর সাফল্যের সঙ্গে ক্রিকেট খেলার পর তাঁর দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর তা মানসিকভাবে মানতে পারছেন না পাপালি। তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, সিএবি যুগ্মসচিবের মন্তব্যে পাপালি প্রচন্ড মর্মাহত, অপমানিতও। সন্ধ্যার দিকে ঋদ্ধির স্ত্রী রোমি উত্তরবঙ্গ সংবাদকে বলেন, সামান্যতম সৌজন্যতা কি আমরা আশা করতে পারি না সিএবির তরফে। বিসিসিআই সবসময় ক্রিকেটারদের স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। কিন্তু সিএবি বোধহয় সেই পথে হাঁটছে না।
আপাতত গুজরাট টাইটান্সের হয়ে আইপিএল খেলতে ব্যস্ত ঋদ্ধি। গুজরাট ইতিমধ্যেই প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলেছে। আগামী ২০ মে দলের সঙ্গে কলকাতায় পৌঁছানোর কথা পাপালির। আইপিএল শেষে তাঁকে কি বাংলা রনজি দলে পাওয়া যাবে? ক্রমশ বাড়তে থাকা স্পর্শকাতর ও বিতর্কিত বিষয়টির জবাব মেলেনি রাত পর্যন্ত। বাংলার কোচ অরুণ লাল বলেন, ঋদ্ধি চ্যাম্পিয়ান ক্রিকেটার। ওকে রনজি কোয়ার্টার ফাইনালে পেলে দলের ভালোই হবে।
বাংলা অধিনায়ক অভিমনু্য় ঈশ্বরণও একইভাবে পাপালিকে দলে চেয়ে বলেন, ঋদ্ধিদা বাংলার হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেললে দলেরই ভালো হবে। জানি না ওকে পাওয়া যাবে কি না। বিতর্কের আগুন ক্রমশ তীব্র হতে থাকার পর সিএবি শীর্ষ কর্তাদের কাছেও ঋদ্ধির ব্যাপারে কোনও সদুত্তর নেই। বঙ্গ ক্রিকেটের নানা মহল থেকে বলা হচ্ছে, সিএবি যুগ্মসচিব ঋদ্ধিকে ফোন করে সরি বলে বিষয়টি মিটিয়ে নিলে ভালো করতেন। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি।
পাপালির স্ত্রী রোমির কথায়, আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু ঋদ্ধিকে নিয়ে যা চলছে, সেটা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না। স্ত্রী হিসেবে আমি বলতে পারি, পাপালির মধ্যে দায়বদ্ধতার কোনও অভাব নেই। মিস্টার দাস কথাটা ঠিক বলেননি। সিএবি সভাপতি অভিষেক আগেই জানিয়েছিলেন, দেবব্রতর মন্তব্য সিএবির কথা নয়। আজও সেকথাই তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে। কিন্তু সমাধান অধরা থেকে গিয়েছে।
ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠা পরিস্থিতিতে সিএবি কী করবে? সন্ধ্যার দিকে সিএবিতে গিয়ে দেখা গেল শীর্ষ কর্তারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে ব্যস্ত। সেই বৈঠকের পর সভাপতি অভিষেক ঋদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, ঋদ্ধির সঙ্গে কথা হয়েছে কি না, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে।
ঋদ্ধি বনাম সিএবি ম্যাচ ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।