রাজা বন্দোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট মেরামতির কাজ বৃহস্পতিবার শেষ হল। গতকাল দুপুরের পর থেকে রাজ্য সেচ দপ্তরের তরফে লকগেট মেরামতির কাজ শুরু হয়। তাদের কারিগরি সহায়তা করছে ডিএসপি বা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসিকে জল ছাড়ার কথা বলা হয়েছে। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে এদিন রাত ৮টার মধ্যে নয় হাজার কিউসেক জল ছাড়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, মাইথন থেকে ৩০০০ কিউসেক জল আর পাঞ্চেত থেকে ৬০০০ কিউসেক জল ছাড়া হবে। ১০০ জন সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মী বুধবার রাতভোর ব্যারেজের লকগেট মেরামতির কাজ করেছেন। সেই কাজে যাতে কোনওভাবে ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য ব্যারেজের ওপর যানজট আটকাতে ভারি গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। জানা গিয়েছে, আপাতত ৩১ নম্বর লকগেট সংস্কার করা হয়েছে। পরে এই লকগেট পরিবর্তন করে নতুন লকগেট লাগানো হবে।
এদিন সকালেই, রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কথা উদ্ধৃত করে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন জানিয়েছিল, দুর্গাপুর ব্যারেজের লকগেট মেরামতির কাজ সন্ধ্যার মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। এদিকে, দুর্গাপুর পুরনিগমের তরফে ট্যাংকারের সাহায্যে জল ও পিএইচই বা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের তরফে জলের পাউচ বিলি করা হয়েছে। তবে পুর বাসিন্দারা জানান, জল সরবরাহ হচ্ছে ঠিকই, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। এদিকে, এদিন সন্ধ্যার দিকে লকগেট মেরামতির কাজ শেষ হলেও, পাইপ লাইনের সাহায্যে এলাকায় জল সরবরাহ রাতের মধ্যে করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেননা, মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজে জল আসতে কমপক্ষে ১৮ ঘন্টা সময় লাগবে। তাড়াতাড়ি এলেও ৮ থেকে ১০ ঘন্টা সময় লাগবে। তারপর সেই জল তুলে পরিশ্রুত করে জল সরবরাহ করা হবে। সেক্ষেত্রে জল সরবরাহ শুরু হতে আগামীকাল সকাল হয়ে যাবে। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সকালে দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজ জলশূন্য করতে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া বন্ধ করা হয়। শেষ পর্যন্ত পাঁচদিন পর বুধবার দুপুরে ব্যারেজ জলশূন্য হয়। তার আগে অবশ্য বালির বস্তা ফেলে দামোদর নদীর গতিপথ আটকানোর চেষ্টা করা হয়।