কলকাতাঃ রাজ্যে বাড়ছে লকডাউনের মেয়াদ। শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের পরই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে একথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাতত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউন থাকছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও ১০ জুন পর্যন্ত রাজ্যের স্কুল, কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউন থাকলেও সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সমস্ত বিপণি দোকান খোলা থাকবে। সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে চলতে হবে। গম, তেলের মিল ও বেকারি খোলা থাকবে।’ তবে নিয়ম না মানলে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অনলাইনে ফুড ডেলিভারি চালু রাখা হবে। তবে কোনওরকম জমায়েত করা যাবে না। ৩টি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে বলেছি, পণ্য়বাহী ট্রেন ছাড়া দূরপাল্লার ট্রেন চালানো যাবে না। আন্তর্জাতিক বিমান না চালানোর কথাও বলা হয়েছে। অসংগঠিত ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে আর্থিক প্য়াকেজের দাবি জানিয়েছি। পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখাশোনার কথা বলা হয়েছে। ২৫ হাজার কোটি টাকার প্য়াকেজ চেয়েছি। কেন্দ্র সরকারকে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করছি। তাঁদের মন্ত্রীরাও যেন আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেন।’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫। এরমধ্যে ১৬টি পরিবারের থেকে ৭০ জন আক্রান্ত।
আগামী ১০ জুন পর্যন্ত রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ থাকার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনিতে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে রাজ্যে স্কুলে গরমের ছুটি চালু হয়। চলে গোটা মে মাসটাই। জুনের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে গিয়ে ছুটি শেষ হয়। যদিও অতিরিক্ত গরম পড়ার জন্য এই ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর নজিরও রয়েছে। গত বছরেই প্রায় দু’মাস গরমের ছুটি দেওয়া হয়েছিল স্কুলে। অস্বাভাবিক গরমে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। তবে এই বছরের পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা সংক্রমণ শুরু হতেই রাজ্যের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার। এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতেই ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটির ঘোষণা করা হয়। এবার সেটাই বাড়িয়ে ১০ জুন করা হল।
করোনা মোকাবিলায় এর আগে স্কুল ছুটি ঘোষণার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পড়ুয়ারা মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত হবে না। প্রত্যেক পড়ুয়ার পরিবারকে চাল ও আলু দেওয়া হয়। এবারেও এপ্রিলের শেষে একবার মিড ডে মিল বিলি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।