শিলিগুড়ি : লকডাউনে নেই নজরদারি। অভিনব কায়দায় শুরু হয়েছে কাঠ পাচার। মহানন্দা নদীকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হযে উঠছে পাচারচক্র। যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে অনেককেই। তবে স্থানীয় কিছু যুবকের যোগসাজশ থাকায় পাচারচক্রের বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ করে রেখেছেন এলাকার অধিকাংশ মানুষ। গাড়ি তোলার যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে যে নদীবক্ষ থেকে কাঠের বড় বড় লগ তোলা হচ্ছে এবং তা বিভিন্ন জায়গায় পাচার হয়ে যাচ্ছে, তা তাঁদের জানা নেই বলে জানান অনেক বনকর্তা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফেও।
বর্ষার সময় জঙ্গলের গাছ কেটে নদীর জলে ভাসিয়ে দেওযাটা নতুন নয়। প্রশাসনিক নজরদারি এড়াতেই এই পন্থা নিয়ে থাকে পাচারকারীরা। কিন্তু এখন শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪৩ এবং ৪৫ নম্বর ওযার্ডের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদীর বিভিন্ন জায়গা থেকে তোলা হচ্ছে কাঠের বড় বড় লগ। শুক্রবার এমন ছবির দিকে নজর রেখে বোঝা গিয়েছে, লগগুলি দীর্ঘদিন ঘরে মাটিচাপা দেওযা ছিল। এখন লকডাউনের জেরে নদীর ওপর প্রশাসনিক নজরদারি কম থাকায় তা তোলা হচ্ছে। লগগুলি তোলার ক্ষেত্রে শুক্রবার ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে গাড়ির টায়ার পরিবর্তনের জন্য ব্যবহৃত জ্যাক। মাটি গর্ত করে জ্যাক ঢুকিয়ে লকগুলি তোলা হচ্ছে। স্থানীয় অনেকেই জানান, প্রয়োজনভিত্তিক আর্থমুভার ব্যবহার করে পাচারকারীরা। দিনের মধ্যে লগগুলি তুলে নদীর নির্জন জায়গায় রেখে দেওযা হয় এবং রাত হলেই তা পাচার করে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের বক্তব্য, কিছুদিন আগে বৃষ্টির সমযে লগগুলি মহানন্দায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং এখন জল কমে যাওয়ায় তা নদী থেকে তুলে নিচ্ছে পাচারকারীরা।
কিন্তু কেন তাঁরা চুপ করে থাকেন? ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘাযতীন কলোনির বাসিন্দা ভবেশ রায় বলেন, ওদের হাত অনেক দূর। ফালতু বাধা দিযে নিজের ক্ষতি কে করবে? তাছাড়া বিষয়টি তো প্রশাসনের দেখা উচিত। একই ধরনের মন্তব্য করে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের রামঅবতার সিং, মুকেশ যাদবরা জানান, ঘটনাটি তাঁদের নজরে আসতেই তাঁরা তা জানান কাউন্সিলারকে। ৪৩ নম্বর ওযার্ড কাউন্সিলার রাগিণী সিং বলেন, কিছুদিন ধরে এমনটা চলছে। আর তা জানতে পেরেই বিষয়টি ভক্তিনগর থানার পুলিশকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওযা হয়েছে কিনা জানি না। ডিসিপি (জোন-ওয়ান) নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হচ্ছে।