শিলিগুড়ি: বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের মা ক্যান্টিনের উদ্বোধন হলেও সেই ক্যান্টিন নিয়ে এবার রীতিমতো দুর্নীতির অভিযোগ। প্রতিদিন ৩০০ জনকে মা ক্যান্টিনের মাধ্যমে দুপুরের খাবার হিসেবে মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে ভাত, ডাল, সবজি ও ডিম দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে কয়েটি জায়গায় মাত্র ৮০ থেকে ১০০ জনকে খাইয়ে ক্যান্টিনের ঝাপ বন্ধ করে বাড়ি চলে যাচ্ছেন অনেকে। বেলা ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সময়ে এই খাবার সরবরাহের কথা থাকলেও অনেক জায়গায় মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যে যতজনকে দেওয়া সম্ভব, তাঁদের খাবার দিয়ে ক্যান্টিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভরদুপুরে খাবারের জন্য কিছু মানুষ মা ক্যান্টিনের সামনে ভিড় জমালেও মাঝেমধ্যে কয়েটি আবার পুরোপুরি বন্ধও থাকে। যা নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়েছে শহরে।শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরনিগমের তরফে মা ক্যান্টিনগুলি চালাবার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই মতো রান্নার গ্যাস, চাল থেকে শুরু করে কিছু সামগ্রী পুরনিগমের তরফে দেওয়া হয়। যিনি রান্না করবেন তাঁর বেতনও দেয় পুরনিগম। বাকি খরচ চালাতে বলা হয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে। যদিও এর জন্য পুরনিগম থেকে ভর্তুকি দেওয়া হয় জন প্রতি ৫ টাকা। অর্থাৎ ৩০০ জনকে খাবার সরবরাহের জন্য প্রতিদিন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দেওয়া হয় ১৫০০ টাকা। তাছাড়া যে ৫ টাকার বিনিময়ে ওই খাবার মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেই ৫ টাকাও স্বনির্ভর গোষ্ঠীরগুলির হাতেই থাকে।
কিন্তু অভিযোগ, ৩০০ জনকে খাবার দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিদিন খুব বেশি হলে অর্ধেক মানুষকে খাবার দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের মা ক্যান্টিনে তুলনামূলকভাবে অনেক মানুষ আসলেও বাগরাকোটের লোকাল বাস স্ট্যান্ড ও নিউ জলপাইগুড়ির ট্রাক স্ট্যান্ডের কাছে থাকা মা ক্যান্টিনগুলির বেহাল অবস্থা। শুক্রবার লোকাল বাস স্ট্যান্ডের পাশে থাকা মা ক্যানটিনে গিয়ে দেখা গেল, বেলা ২টাতেও সেই ক্যান্টিন খোলেনি। স্থানীয় ব্যবসাযী যোগিন্দর প্রসাদের অভিযোগ, এই ক্যান্টিনের কোনও ঠিক নেই। মাঝেমধ্যে এখান থেকে খাবার দেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক থাকার পরই সব গুটিয়ে ফেলা হয়। অভিযোগ যে সত্যি তা জানালেন স্থানীয বাবুল সাহা, সত্যদেও প্রসাদরাও। খুব বেশি হলে প্রতিদিন ৪০-৫০ জনকে খাবার দেওয়া হয় বলেও জানালেন তাঁরা। তবে সব থেকে বড় সমস্যা মা ক্যান্টিনটি যেই জায়গায় রয়েছে তার পরিবেশ নিয়ে লোকাল বাসস্ট্যান্ডের পাশে শৌচালয়ে খুব কাছেই এই ভাঙাচোরা দোকানের মধ্যে ক্যান্টিন চলে। এতদিন তাও ক্যান্টিনের উপর ব্যানার ঝুললেও এদিন আর সেটাও দেখা গেল না।
স্থানীয় কাউন্সিলার সঞ্জয় শর্মাকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘দুই ঘণ্টা খাবার দেওয়ার কথা। ৩০০ জনকে সেখানে খাবার দিতে হয়। তবে কোনদিন যোগান কম থাকলে এরা তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেয়। যে দেখাশোনা করে, সেই ছেলেটি চিকিৎসার জন্য বাইরে রয়েছে বলে একটু সমস্যা হচ্ছে।‘ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের কাছে যে মা ক্যান্টনটি রয়েছে সেটিরও ভয়ানক অবস্থা। সেটি এদিন অবশ্য খোলাই পাওয়া গেল। সেখানে খাবার সরবরাহ করছিল স্বরূপ নামে এক যুবক। তিনি বললেন, ‘আমাদের এখানে প্রতিদিন ১২৫-১৫০ জনকে খাওয়ানো হয়। ৩০০ জন সচরাচর হয় না। যদিও পুরনিগম থেকে প্রতিটি গোষ্ঠীকে ৩০০ জনের খাবারের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন, কম মানুষকে খাবার খাইয়ে কিংবা কোনদিন ক্যানটিন না খুলেই কিভাবে প্রতিদিন ৩০০ জনের খাবারের বিল নেওয়া হচ্ছে? শিলিগুড়ি পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, ‘এরকম হলে বিষয়টি মেনে নেওয়া হবে না। আমাদের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি তাঁরা যেন মাঝেমধ্যেই মা ক্যান্টিনগুলিতে গিয়ে সেখানকা |
লেটেস্ট খবর জানার জন্য দেখুন www.uttarbangasambad.com এবং ব্রেকিং নিউজ (Breaking News) এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন উত্তরবঙ্গ সংবাদ টিভিতে ।
আরও পড়ুন : ‘জুতো পায়ে দিলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন’, ২৪ বছর ধরে খালি পায়েই হাঁটেন বংশীহারির গোপাল সরকার