হরিশ্চন্দ্রপুর : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের নাগরিকদের ঘরবন্দী থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মালদা জেলার কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রামপুর গ্রামে কুসংস্কারের জাল বিছাতে শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকার দুলাল দাসের বাড়িতে একটি কাঁঠাল গাছের গোড়া থেকে ছত্রাক জন্মায়। যার আকৃতি অনেকটা ফনা তোলা সাপের মত। এর জেরেই কুশিদা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় নাগ নাগিনীর গুজব ছড়ায়। কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে লকডাউন উপেক্ষা করে ঢাকঢোল পিটিয়ে পুজো আরম্ভ করে দেয় স্থানীয় মানুষ। এলাকার কিছু যুবক এব্যাপারে তাদের সজাগ করলেও পুজো চলতেই থাকে।
স্থানীয় যুবক রাজেশ রায় জানান, তাঁরা ওই এলাকার মানুষদের অনেক বুঝিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। লকডাউনের প্রথম দিন থেকে ক্রমাগত লোকসমাগম বাড়ছে। ফলে গ্রামের মানুষদের সামাজিক মেলামেশা বেড়ে যাচ্ছে। ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনাও বাড়ছে। পুলিশ এসে পুজো বন্ধ করলেও পুলিশের অনুপস্থিতে ফের ওই ছত্রাককে ঘিরে পুজো আরম্ভ হচ্ছে।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ‘পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। ইতিমধ্যেই পুলিশ ওখানে গিয়ে পুজো বন্ধ করেছে। যাতে লোক সমাগম না হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ‘খবর পেয়েই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন মানুষের সামাজিক মেলামেশা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। এলাকায় লিফলেট বিলি করা হয়েছে। ওই গাছ বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছি। সিভিক ভলেন্টিয়ার দিয়ে স্থায়ী পাহাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
মালদা জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের আহ্বায়ক সুনীল দাস জানান, মূলত ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় কাঁঠাল, আম গাছ থেকে এ ধরনের ছত্রাক বেরোয়। এদের গ্রাম্য ভাষায় কান চটি বলে। হতে পারে পার্শ্ববর্তী কোন প্রভাবের ফলে ওই ছত্রাকটি সাপের আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে কোনও দৈবিক ব্যাপার নেই। কুসংস্কার ও গুজবের বশবর্তী হয়ে গ্রামের মানুষ এই ধরনের কাজ করছে। বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে এলাকায় সচেতনতার প্রচার চালানো হবে।