আলিপুরদুয়ার ব্যুরো: তৃণমূল সাংসদ কবীর সুমনের একটি গানের কয়েকটি কথা ছিল ‘হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং …।’ কথাগুলি হয়তো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন রাজ্য বিধানসভার বিজেপি (BJP) বিধায়ক মনোজ টিগ্গা (Manoj Tigga)। তাই ছ’-ছ’বার ভোটে দাঁড়িয়ে প্রথম পাঁচবার হারের মুখ দেখেও দমেননি তিনি। ষষ্ঠবার গলায় ওঠে বিজয়মালা। এমন নাছোড় মনোভাবের জন্য আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বীরপাড়ার ‘বিনা পয়সার শিক্ষক’ মনোজ টিগ্গার কপালে ছিঁড়েছে লোকসভা আসনের প্রার্থীর শিকে। আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে জিততে হলে শুধু চা শ্রমিকই নয়, দরকার কৃষকদের সমর্থনও। বিষয়টি অজানা নয় তাঁর। তাই সোমবার সকাল থেকে ভোটের প্রচারে এসে একেবারে নেমে পড়লেন আলুখেতে চাষিদের মাঝে। শুধু কথাবার্তাই নয়, তাঁদের সঙ্গে হাত লাগালেন আলু তোলার কাজেও। এভাবে তিনি মাটির কাছাকাছি চলে আসায় অবাক চাষিরাও।
সোমবার দিনভর আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের নানা এলাকায় ঘুরে প্রচার করেন মনোজ। দুপুরে তারই ফাঁকে পাতলাখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিয়াবাড়ি গ্রামে স্থানীয়দের সঙ্গে আলু তুলতে দেখা যায় তাঁকে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলু তোলার ফাঁকে বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের অভাব-অভিযোগ ও দাবিদাওয়ার কথা শোনেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা সহ দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। মনোজের কথায়, ‘কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ভালো সাড়া পেলাম। ওঁদের বললাম, ভোটে জিতলে সংসদে কৃষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হব। কৃষকরা যেন কেন্দ্রীয় সরকারের সব রকমের সাহায্য-সহযোগিতা পান সেটাও দেখব।’
এদিন ব্লকের সাহেবপোঁতা ও বাবুরহাটে দলীয় কর্মীদের নিয়ে দুটি বৈঠকও করেন টিগ্গা। সেখানে প্রার্থীর সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের পরিচয় করানো হয়। সাহেবপোঁতায় এক দলীয় কর্মীর বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ সারেন। এদিন বাবুরহাট বাজারে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা বলার পাশাপাশি প্রচার করতে দেখা যায় তাঁকে। সকালে তিনি প্রচার শুরু করেন জলদাপাড়া বনাঞ্চল সংলগ্ন শালকুমারহাট থেকে৷ জলদাপাড়া মৌজায় গত জানুয়ারিতে থার্মোকলের রাম মন্দির তৈরি করেছিলেন স্থানীয় রণজিৎ রায়৷ গত ২২ জানুয়ারি সেখানে রামের পুজো হয়। মনোজ এদিন সেই মন্দির দর্শন করেন৷ নতুনপাড়া বাজারের হরি মন্দিরেও প্রণাম করে আসেন। শালকুমারহাটে কার্জি পরিবারের শতাব্দীপ্রাচীন কালী মন্দিরে পুজো দেন তিনি। পরে স্থানীয় এক বুথকর্মীর বাড়িতে সাংগঠনিক বৈঠক করেন৷ বিধানসভাভিত্তিক কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন। সিএএ কার্যকর প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘এটি কেন্দ্রের একটি ভালো পদক্ষেপ। আসন্ন লোকসভা ভোটে এর ভালো ফল মিলবে।’