এফসি গোয়া – ০
এটিকে মোহনবাগান – ২ (মনবীর ২)
বাম্বোলিম : আইএসএলের নিয়ম কিছু অদ্ভূত। লিগ তালিকার কে কোথায় দাঁড়িয়ে তা পরিষ্কার করা হয় একেবারে লিগের শেষে। হেড টু হেডে এগিয়ে থাকার হিসাব আগে দেখানো হয় না।
তাই নিয়মের যাঁতাকলের জন্য মঙ্গলবার জিতেও দ্বিতীয় স্থানেই থাকলো এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হেড টু হেডের হিসাব ধরা হলে কিন্তু এদিনের জয়ের পর এক নম্বরে হুয়ান ফেরান্দোর দল। কারণ এক ম্যাচ কম খেলে হায়দরাবাদের সঙ্গে পয়েন্ট (২৯) সমান হলেও তাদের বিরুদ্ধে জিতেছেন মেরিনার্সরা।
আগের ম্যাচে চেন্নাইয়ান এফসিকে পাঁচ গোল দেওয়ায় মনে হয়েছিল হয়তো ওর্তিজরা ঝামেলায় ফেলতে পারেন এটিকে মোহনবাগানকে। কিন্তু দুই অর্ধের শুরুতে একটা করে গোল, ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারন করে দেয়। ম্যাচ শুরুর সময়ে ঠিকঠাক টেলিভিশন সেটের সামনে সমর্থকরা গুছিয়ে বসার আগেই গোল পেয়ে যায় তাঁদের প্রিয় দল। মাত্র ৩ মিনিটে পাওয়া কর্ণার থেকে। লিস্টনের কর্ণার যেভাবে বাঁক খেয়ে ভেসে এসেছিল, সেটাই হয়ত গোলে ঢুকে যেত। মনবীর সিং শুধু মাথা ছুঁইয়ে ১-০ নিশ্চিত করলেন।
দ্বিতীয়টা লেনি রডরিগেজের থ্রু ধরে ধীরাজ সিংকে কাটিয়ে। গোলকিক থেকে নিজেরা খেলা শুরু করে আক্রমনে উঠে যাওয়ায় তৈরিই ছিল না গোয়া ডিফেন্স। দুটো গোলের পরেই একাধিক সুযোগ পেয়েছেন লিস্টন। যা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তাছাড়া নিজে সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেও মনবীরকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করানোর চেষ্টায় গোলসংখ্যা বাড়েনি। তবে দূর্ভাগ্য লিস্টনের। একটা কর্ণার ক্রসপিসে লেগে বেড়িয়ে না এলে, তাঁর গোলসংখ্যা বাড়তো। নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেন জনি কাউকোও। সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে গোয়াকে গোলের মালা পরাতে পারত মোহনবাগান।
প্রথমার্ধেই হালকা চোট পেলেও গোটা সময়টা সাহসের পরিচয় দিলেন পাঞ্জাব দা পুত্তর মনবীর। এদিন প্রথম একাদশে আশুতোষ মেহতার বদলে সন্দেশ ঝিঙ্ঘানকে নিয়ে আসা ছাড়া আর কোনও পরবির্তন করেননি হুয়ান ফেরান্দো। ফর্মেশনও সেই ৩-৫-২ রেখে দেন তিনি। লিস্টন-মনবীরদের জন্য বল তৈরি করে দেওয়া এবং দীপক টাংরির ধ্বংসাত্মক ফুটবলের মাঝে লেনি রডরিগেজ হোল্ডিং মিডফিল্ডারের কাজটা নিঃশব্দে করে যাচ্ছেন। তিনিই মাঝমাঠের আনসাঙ হিরো। ডিফেন্সে সন্দেশের এসে যাওয়া এবং প্রীতম কোটালের নিজের রাইট ব্যাক পজিসনে ফিরে যাওয়া বাড়তি নিরাপত্তা দিয়েছে দলকে।
করোনা সংক্রমনে আবার কাবু এফসি গোয়া শিবির। মাঝমাঠে ছিলেন না এডু বেদিয়া। সেট পিসে ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ প্রথমার্ধে কিছুটা চেষ্টা করেছেন। ২৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তাঁর জোরালো শট অমরিন্দার ব্লক না করলে তখনই ১-১ হয়ে যেতে পারত। গোল পেতে পারতেন আনোয়ার আলিও। তাঁর শট ক্রসপিসে লেগে বাইরে যায়। পুরো শক্তি না নামানো বা দ্রুত গোল খেয়ে যাওয়ার পরেও কিন্তু হতোদ্যম হয়নি ডেরেক পেরেরার দল। বরং আক্রমন-পাল্টা আক্রমনে রীতিমত জমজমাট ছিল লড়াই। কয়েকবার বিচ্ছিন্নভাবে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন শেরিটন ফার্নান্ডেজ, জোরগে ওর্তিজরা। কিন্তু বাগান ডিফেন্স সতর্ক থাকায় কিছু করে উঠতে পারেননি।
এদিন প্রথমার্ধের শেষদিকে যুবভারতী বা ফতোরদার পুনরাবৃত্তি হয়ে ব্যাম্বোলিম অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে বাতিস্তম্ভের কিছু অংশ নিভে গিয়ে কিছুক্ষন খেলা বন্ধ থাকায় সময় নষ্ট হয়। তাতে অবশ্য মেরিনার্সদের খেলার ঔজ্বল্য ঢাকা পড়ল না।