হরিশ্চন্দ্রপুর, ২০ মে: লালা পরীক্ষার দাবিতে পথ অবরোধ করলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।
বুধবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর অঞ্চলের স্থানীয় মহেন্দ্রপুর হাইস্কুলে থাকা কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যেই তুলসিহাটা-ভালুকা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। পাশাপাশি বিক্ষোভও দেখাতে থাকেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে তাঁদের সকলের লালা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে হবে। কোয়ারান্টিন সেন্টারে সরকারিভাবে খাবার দেওয়ার দাবিও জানান তাঁরা।
বিক্ষোভরত শ্রমিক সোহেল সরকার বলেন, আমরা চার-পাঁচ দিন হল রাজস্থান থেকে ফিরেছি। হরিশ্চন্দ্রপুরে এসেই প্রথমে থানায় গিয়ে রিপোর্ট করি। তারপরে সেখান থেকে গ্রামের কোয়ারান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয় মহেন্দ্রপুর হাইস্কুলের সেন্টারে প্রায় ২৭০ জন শ্রমিক রয়েছেন। সেন্টারে থাকলেও বাড়ি থেকেই আমাদের খাবার আসছে। আমরা চাই, স্থানীয় প্রশাসন আমাদের দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করুক। পাশাপাশি সেন্টার থেকেই আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হোক।
আরেক পরিযায়ী শ্রমিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, যতক্ষণ না আমাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে ততক্ষণ আমরা এই পথ অবরোধ চালিয়ে যাব। প্রশাসন থেকে কোনো আশ্বাস না পেলে অবরোধ তুলব না। লকডাউনের মধ্যে কাজ ছেড়ে চলে এসেছি। তাই আমাদের হাতে কোনও টাকা পয়সা নেই। তাই আমাদের খাবারের ব্যবস্থাও প্রশাসনের করা উচিত। মহেন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা বিমান ঝা বলেন, মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ৬ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছিল। তাই লালা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করাটা একান্তই জরুরী।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক প্রথম দিকে ফেরা শ্রমিকদের হোম কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন গ্রামে স্থানীয় বিদ্যালয়গুলিতে কোয়ারান্টিন সেন্টার করা হয়েছে। এখানে এদের থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। এলাকার মেডিকেল টিম ঘুরে ঘুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। এই এলাকায়ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১’এর বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, সরকার নির্ধারিত গাইডলাইন মেনে ভিনরাজ্য ফেরত যে সমস্ত শ্রমিকদের মধ্যে উপসর্গ দেখা যাবে শুধুমাত্র তাঁদেরই লালা সংগ্রহ করা হবে। বাকিদের কেবলমাত্র স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। এলাকায় আসা মাত্রই প্রশাসনিকভাবে সমস্ত শ্রমিককে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে কোয়ারান্টিন করে রাখা হচ্ছে। সেইসব সেন্টারে মেডিকেল টিম যাবে। যাদের উপসর্গ থাকবে তাঁদের লালা নেওয়া হবে। তবে খাবারের ব্যবস্থাটা শ্রমিকদের নিজেদেরকে করতে হবে। প্রশাসনের তরফে কেবলমাত্র তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।