উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কাঁথি পুরসভা থেকে উধাও সারদা কাণ্ডের (Sarada case) ফাইল। এমনই অভিযোগ করেছেন কাঁথি (Kanthi) পুরসভার চেয়ারম্যান। অভিযোগ সামনে আসতেই বিশেষ তৎপরতা শুরু করেছে কাঁথি পুলিশ। এই ঘটনার সূত্র ধরেই রবিবার আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে জেরা করল কাঁথি থানার আইসি সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের পাঁচ সদস্য। আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যেই সারদা তদন্তের রিপোর্ট জমা দেবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সম্প্রতি সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন অভিযোগ করেছিলেন, কাঁথিতে সারদার আবাসন প্রকল্পের জন্য তাঁর থেকে কয়েক কোটি টাকা নেন শুভেন্দু অধিকারী। সুদীপ্ত সেনের এই অভিযোগের পরই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হয় কাঁথি পুলিশ। সেই সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করতে গিয়ে প্রথমেই হোঁচট খায় পুলিশ। কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন পুরসভা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে সারদা আবাসন প্রকল্পের ফাইল। এই অভিযোগ সামনে আসতেই সুদীপ্ত সেনকে জেরা করার সিদ্ধান্ত নেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। রবিবার কাঁথি থানার আইসি সহ জেলা পুলিশের ৫ সদস্য বেলা ১১ টা নাগাদ যান আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেলে। সেখানে গিয়ে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা ধরে জেরা করেন।
জেরা করে জেল থেকে বেড়িয়ে এসে কাঁথি থানার আইসি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, সুদীপ্ত সেন পুলিশকে তদন্তে সবরকমভাবে সহযোগিতা করেছেন। জেরায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সারদা কর্তা। সেইসময় যে মোটা অঙ্কের বা বেআইনী লেনদেন হয়েছে এটা নিশ্চিত। তবে তদন্তের স্বার্থে এইমুহূর্তে সব বলা সম্ভব নয়। আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবেন তিনি। জেরায় শুভেন্দু অধিকারী বা সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোন কথা সারদা কর্তা বলেছেন কিনা সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন আইসি।
এবার প্রশ্ন, কাঁথি পুরসভা থেকে উধাও হয়ে যাওয়া সারদা ফাইলে কি ছিল? জানা গেছে, যে ফাইল উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ সেটি একটি বিল্ডিং সংক্রান্ত। সুদীপ্ত সেন দাবি করেছিলেন, কাঁথি পুর এলাকায় একটি বহুতল নির্মানের জন্য বর্তমান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে প্রথমে কাঁথি পুরসভায় ৫০ লক্ষ টাকা জমা করেছিলেন তিনি। তারপর মোট ৯০ লক্ষ টাকা জমা করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও মেলেনি বহুতল আবাসন নির্মানের বৈধ প্ল্যান। সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ সারাদা আবাসন প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন শুভেন্দু। টাকা বা বৈধ প্ল্যান চাইতে গেলেই তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হত বলেও অভিযোগ। যে সময়ের ঘটনা সামনে এসেছে সেই সময় কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী। সেই আবাসন প্রকল্পের ফাইল উধাও হয়ে গিয়েছে বলেই অভিযোগ করা হয়েছে কাঁথি পুরসভার তরফে।
কি করে কাঁথি পুরসভা থেকে সারদার ফাইল উধাও হয়ে গেল? এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ শুভেন্দুর নির্দেশে তথ্য প্রমান লোপাট করতে ফাইল উধাও করেছেন তৎকালীন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী। এদিকে বিজেপির তরফে দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক তথা কাঁথি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ কুমার দাস বলেন, ‘ফাইলগুলি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে রাখা থাকে পুরসভায়। সৌমেন্দুবাবু যখন পুরসভা ছেড়ে এসেছিলেন, তখন ফাইল লোপাটের গল্প সামনে আসেনি। এতদিন পর মিথ্যে গল্প সাজানো হচ্ছে। আসলে শুভেন্দু ও সৌমেন্দুকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসাতে ষড়যন্ত করছে তৃণমূল সরকার।
আরও পড়ুনঃ দুর্নীতির কথা জানলেও ব্যবস্থা নিতেন না পার্থ, তোপ বৈশাখীর