নয়াদিল্লি: করোনা আবহে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার ঘেরাটোপে শুরু হল সংসদের বাদল অধিবেশন। কিন্তু সংসদের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কণ্ঠে ভারত-চীন সীমান্ত সংকট নিয়ে যে উদবেগের সুর শোনা গেল তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় মহলে।
সোমবার সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীত দিয়ে সভার সূচনা করেন লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সংসদীয় মন্ত্রী সহ বিরোধী দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন সংসদে। সভা শুরুর পর প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ‘ভারতরত্ন’ প্রণব মুখোপাধ্যায় সহ ‘পদ্মবিভূষণ’ পণ্ডিত যশরাজ, কংগ্রেস সাংসদ এইচ বসন্তকুমার সহ প্রায় এক ডজন প্রয়াত সম্মানীয় সদস্যের স্মৃতিচারণ করা হয়।
এদিন অধিবেশন শুরুর আগে প্রথামাফিক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মোদি বলেন, ‘আমাদের বীর জওয়ানরা দেশমাতৃকার সম্মান রক্ষায় সীমান্তে অসীম লড়াই লড়ছেন। ঠাণ্ডার মরসুমে তা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। তবু নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় তারা সদা জাগ্রত। আমি আশা করব সমস্ত সংসদ, সাংসদেরা একসুরে আজ এই বার্তা দেবেন যে এই সংকটকালে গোটা দেশ সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছে।’
সীমান্ত জটিলতার পাশাপাশি করোনা আবহ নিয়েও এদিন সম্বোধন করেন মোদি। তিনি বলেন, ‘মহামারির সময়ে এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আজ অধিবেশন শুরু হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, করোনাও যেমন আছে তেমনই আছে কর্তব্যও। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত সাংসদ একযোগে সংবিধান ও দেশহিতে কর্তব্যের পথ বেছে নিয়েছেন। তাদের অভিবাদন।’ তাঁর মতে, এর আগে করোনার জন্য মহামারির প্রাদুর্ভাবে বাজেট অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে। চলতি অধিবেশনেও আনা হয়েছে কিছু জরুরি বদল। মোদি বলেন, ‘যতক্ষণ না এর কোনও প্রতিষেধক বেরোচ্ছে, ততক্ষণ কোনও ঢিলেমি দেওয়া যাবেনা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুরক্ষা নিয়েই চলতে হবে। যেভাবেই হোক এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে হবে।’ পাশাপাশি এদিন সংবাদমাধ্যমকেও সতর্কতা অবলম্বন করার কথা বলেন তিনি। এদিন লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লাও তাঁর বক্তব্যে সভার কাজ সুষ্ঠুভাবে চালনার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন জানান।
প্রসঙ্গত, এদিন লোকসভার কর্মসূচি পরিকল্পনা কমিটির বৈঠকে প্রণববাবুর প্রয়াণের কথা মাথায় রেখে একদিন ছুটি দাবি করে কংগ্রেস ও তৃণমূল। যদিও কম সময়ের জন্য তা মানতে রাজি হয়নি কেন্দ্র। ‘অবিচুয়ারি’র পর প্রয়াতদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে সভার কাজ এক ঘণ্টার জন্য মুলতুবি রাখেন স্পিকার ওম বিড়লা।
সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, চীন-ভারত সীমান্ত সংকট নিয়ে আলোচনা চেয়ে লোকসভায় স্থগিত প্রস্তাব এনেছেন কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী ও কে সুরেশ। সারাদেশে ১২ জন তরুণ নিট পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা নিয়ে ডিএমকে ও সিপিএম তথা দিল্লি দাঙ্গাকাণ্ডে বিশিষ্ট বামনেতা ও শিক্ষাবিদদের নাম পুলিশের চার্জশিটে আসা নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনেছেন আরএসপি সাংসদ এন প্রেমচন্দ্রন। জিএসটি নিয়ে আলোচনার দাবিতে নোটিশ দিয়েছে তৃণমূলও।