সুভাষ বর্মন, ফালাকাটা: ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ট্রুনাট মেশিনে রেকর্ড পরিমাণে করোনার পরীক্ষা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, এক মাসের মধ্যে দুটি ট্রুনাট মেশিনে এক হাজারেরও বেশি সোয়াব টেস্ট হয়েছে। যা উত্তরবঙ্গ তো বটেই, গোটা রাজ্যের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রাজ্যের আর কোনও হাসপাতালের ল্যাবে ট্রুনাট মেশিনে এত সংখ্যক করোনা পরীক্ষা হয়নি।
গত মার্চ মাসে আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রথম ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই করোনা সংক্রামিতদের চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতালে পৃথক আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু হয়। গত ১৮ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রিমোটের মাধ্যমে ওই হাসপাতালে ১০ বেডের সিসিইউ-র উদ্বোধন করেন। কিন্তু ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল শহরের মধ্যে থাকায় পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে করোনার সংক্রামিতদের চিকিৎসা এখানে বন্ধ হয়। জেলার তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতালকে পৃথকভাবে প্রথমে সারি হাসপাতাল এবং বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করা হয়।
এদিকে শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভিআরডিএল ল্যাব থেকে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় জেলার মধ্যে প্রথম ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই ট্রুনাট মেশিন বসানো হয়। এখানে গত ১২ মে একটি এবং ২৫ মে আরও একটি ট্রুনাট মেশিন বসানো হয়। এই দুটি মেশিনে রোজ গড়ে প্রায় ৪০টি করোনা পরীক্ষা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ট্রুনাট মেশিনে পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে দ্বিতীয়বার আর পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। তবে এখানে পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেলে তা আরও একবার চূড়ান্তভাবে পরীক্ষার জন্য ভিআরডিএল-এ পাঠানো হয়। ফালাকাটায় অবশ্য অধিকাংশ রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অনেকটাই এগিয়ে যায় আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
সম্প্রতি, তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতাল কোভিড হাসপাতাল হিসেবে পরিণত হওয়ায় ফালাকাটা গ্রামীণ হাসপাতালকে সারি হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। তবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা চালু রয়েছে। এখানকার ল্যাবে শুধু ট্রুনাট মেশিনে করোনার পরীক্ষা হচ্ছে। রাজ্যের মধ্যে এখানকার করোনার পরীক্ষা গতি অনেকটাই বেশি।
আলিপুরদুয়ার জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘আজ পর্যন্ত ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ল্যাবে ট্রুনাট মেশিনে এগারোশোরও বেশি কোভিড-১৯-এর পরীক্ষা হয়েছে। যা রাজ্যের মধ্যে এখনও সর্বোচ্চ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলায় এখন তিনটি ট্রুনাট মেশিন রয়েছে। দুটি ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ও একটি জেলা হাসপাতালে। আরও তিনটি ট্রুনাট মেশিন আসতে চলেছে। তবে ফালাকাটায় ট্রুনাটে পরীক্ষার ক্ষেত্রে রেকর্ড হয়েছে। ফালাকাটার থেকে আরও আগে চালু হলেও রাজ্যের অন্যান্য ল্যাবের ট্রুনাটে এখনও এত পরিমাণ করোনা পরীক্ষা হয়নি।’ এর পাশাপাশি ফালাকাটা গ্রামীণ হাসপাতাল এখন সারি হাসপাতালে হিসেবে চালু রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।