নয়াদিল্লি : ১৩০ কোটি দেশবাসীর কাছে রবিবার রাত ৯ টায় ৯ মিনিট সময় চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঘরের বৈদ্যুতিন আলো নিভিয়ে ৯ মিনিটের জন্য মোমবাতি, টর্চ, প্রদীপ বা মোবাইলের ফ্লাসলাইট জ্বালানোর আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর আবেদন, “রাত ৯টায় ন’ মিনিটের জন্য আলো বন্ধ করে দরজার সামনে বা বারান্দায় মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ জ্বালান। এতে প্রমাণিত হবে, ভেদাভেদ ভুলে ১৩০ কোটি মানুষের দেশ একসঙ্গে করোনা যুদ্ধে শামিল।“ এই সময় কোথাও জমায়েত না করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। মোমবাতি জ্বালানোর সময় সোশ্যাল ডিসট্যানসিং বজায় রাখার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির উদ্দেশে ভিডিয়ো বার্তায় আর যা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-
- জনতা কার্ফুতে সরকারের আবেদনে দেশবাসী অভতপূর্ব সাড়া দিয়েছেন।
- লকডাউনের সময়ও আপনাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। লকডাউনে ঘরে থাকলেও কেউ একা নন। লকডাউনে সবাই এক হয়ে লড়ছেন।
- এই লকডাউনে যে যার ঘরে আমরা বন্দি থাকলেও, আমাদের সঙ্গে রয়েছে ১৩০ কোটি দেশবাসীর সম্মিলিত শক্তি। জনতা জনার্দন ঈশ্বরের প্রতিরূপ। যখনই দেশ সংকটে পড়েছে, তখনই এই জনতা জনার্দন যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়েছেন।
- দুনিয়ার কোনও শক্তি আমাদের হারাতে পারবে না। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদেরকে জিততেই হবে।
দেশে করোনা থাবা বসানোর পর থেকে এর আগে দু’বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমবারের ভাষণে তিনি জনতা কার্ফুর ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে ২২ মার্চ জনতা কার্ফু পালনের পাশাপাশি দেশবাসী ঘন্টা -থালা-বাসন বাজিয়ে চিকিৎসক, নার্স, সংবাদকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের অভিবাদন জানায়। এরপর ২৪ মার্চ দেশজুড়ে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেন মোদি। আর আজকের ভিডিয়ো বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ১৩০ কোটি দেশবাসীর কাছে রবিবার রাত ৯ টায় ৯ মিনিট মোমবাতি, টর্চ, প্রদীপ বা মোবাইলের ফ্লাসলাইট জ্বালানোর আবেদন জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ হিন্দি ও ইংরাজীতে একটি ট্যুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। ট্যুইটে তিনি লেখেন, “আগামিকাল সকাল ৯টায় ভারতবাসীর উদ্দেশে ছোটো ভিডিও বার্তা দেব।” বলাই বাহুল্য, তার এই ঘোষণার পর দেশজুড়ে জল্পনা ছড়ায়। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে কী বার্তা দেবেন, তা নিয়েই এই জল্পনা ছড়ায়। লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টিও শিরোনামে আসে। অবশ্য দিনকয়েক আগে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবা সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, লকডাউন বাড়ানোর বিষয়ে এখনই কেন্দ্র কিছু ভাবছে না। এবার প্রধানমন্ত্রীর ভিডিয়ো বার্তার পর সেই জল্পনা পুরোপুরি দূর হল।
গতকাল সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলার প্রতিনিধি হিসাবে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সমস্ত রাজ্যকে আরও কঠোর হাতে লকডাউন কার্যকর করার বার্তা দেন। যারা লকডাউন মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন মোদি। লকডাউন উঠে যাবার পর রাজ্যগুলিকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার আবেদনও জানান তিনি।