অমিতকুমার রায়, হলদিবাড়ি : কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি বাজারটি জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। আড়াই বছরে হলদিবাড়ি শহরে বেশ কয়েটি অগ্নিকাণ্ড ঘটে গেলেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। হলদিবাড়ি বাজারের বিষয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অদূরভবিষ্যতে বড়োসড়ো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে বাজারের সংস্কারের পাশাপাশি এখানে উপযুক্ত অগ্নি প্রতিরোধক ব্যবস্থার জন্য ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বাসিন্দারা দাবি জানিয়েছেন।
সমস্যার গুরত্ব বুঝে পুরসভা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে উদ্যোগী হয়েছে। হলদিবাড়ি পুরসভার প্রশাসক সঞ্জয় পণ্ডিত বলেন, বাজার এলাকায় রাস্তা দখলমুক্ত করা, জলের নতুন উৎস তৈরি করা সহ একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই সেই কাজ শুরু হবে। বিভিন্ন মার্কেট কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ যাতে অগ্নিনির্বাপণ বিধি মেনে চলে সেজন্য নির্দেশ দেওয়া হবে বলে সঞ্জয়বাবু জানান।
কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই হলদিবাড়ি বাজার এলাকায় যত্রতত্র দোকানপাট গজিয়ে ওঠায় এলাকাটি জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনে বাজারে দমকলের গাড়ি ঢোকার মতো চওড়া রাস্তা নেই। তার উপর ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসার মালপত্র দোকানের বাইরে রাস্তার উপর রাখায় ঠিকমতো চলাফেরা করার মতো জায়গাটুকুও থাকছে না। এছাড়া, একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাজারের গলিগুলিতে রাস্তার উপর ত্রিপল টাঙিয়ে সেখানে বসেই ব্যবসা করছেন। এর জেরে ক্রেতারা বাজারে এসে নাজেহাল হচ্ছেন।
বাজার এলাকায় জলের কোনো উৎস নেই। বাজারের কেন্দ্রস্থলে প্রাচীন একটি মাত্র কুয়ো থাকলেও সংস্কারের অভাবে সেটি ব্যবহারের অযোগ্য। পুরসভা একসময় এখানে নলবাহিত জল পরিসেবার ব্যবস্থা করলেও সংস্কারের অভাবে তা বেহাল হয়ে পড়েছে। ফলে কখনও আগুন লাগলে বড়োসড়ো বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। এলাকায় যতগুলি মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি হয়েছে সেগুলির বেশির ভাগেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। মার্কেট কমপ্লেক্সগুলিতে আগুন লাগলে দ্রুত উপরতলায় পেঁছানোর মতো ব্যবস্থা নেই। শহরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের একটি খুঁটি থেকে বহু সংযোগ নেওয়া হয়েছে।
হলদিবাড়ি বাজার সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, বাজার এলাকায় জলের উৎস তৈরি করতে বহু বছর ধরে আমরা পুরসভাকে আবেদন জানিয়ে এলেও আজ পর্যন্ত কোনো কাজের কাজ হয়নি। হলদিবাড়ির এক দমকলকর্মী বলেন, হলদিবাড়ি বাজার এলাকায় বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে এখানে কোনোভাবে আগুন লাগলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হবে। রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে দমকলের গাড়ি ঢোকার জায়গা নেই। বাজার চত্বরে জলের কোনো উৎস না থাকায় বাইরে থেকে জল নিয়ে এসে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়। সমস্যার গুরুত্ব বুঝে দমকলকর্মীরা ইতিমধ্যেই হলদিবাড়ি বাজার, বিভিন্ন মার্কেট কমপ্লেক্স, প্রতিষ্ঠানের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন।