কালিয়াচক : করোনা প্রতিরোধে লকডাউন। কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ বলে নিদান দিয়েছেন চিকিৎসক সহ গোটা বিশ্বের ভাইরোলজিস্টরা। কিন্তু এই মুহূর্তে নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। কাজ নেই, সঞ্চিত অর্থও শেষ বা শেষের পথে। তাই চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের বার্তা মাথায় না রেখে ব্যাপক ভিড় জমেছিল কালিয়াচকের জালালপুর ইউনাইটেড ব্যাংকের সামনে। শিকেয় উঠেছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিদান।
জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ধরনের ভাতা সহ এনআরইজিএস প্রকল্পের টাকা সম্প্রতি ব্যাংকে এসেছে। সেই খবর পেয়ে শনিবার এলাকার প্রচুর গ্রাহক ভিড় জমায় ব্যাংকের সামনে। লকডাউনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বারবার বলা হলেও সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একে অন্যের গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে রইলেন গ্রাহকরা। যদিও ব্যাংকের সামনে দুজন সিভিক ভলান্টিয়ার দাঁড়িয়ে গ্রাহকদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু অত ভিড় সামাল দিতে তাঁরা ব্যর্থ হন। সকাল থেকে দুপুর প্রায় ১২টা পর্যন্ত ব্যাংকের সামনে ছবিটা ছিল একইরকম। যদিও পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকার সহ কালিয়াচক থানার আইসি হাজির হন ব্যাংকের সামনে। তাঁরা ব্যাংকের সামনে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা সব মানুষকে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড় করান। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকার বলেন, ব্যাংকের সামনে ভিড়ের খবর পেয়ে আমরা এসেছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকলকে লাইনে দাঁড় করানো হয়েছে।
সকাল ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জুলফিকার আলি বলেন, আমি অনেকক্ষণ ধরে এখানে রয়েছি। গ্রাহকদের নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড় করানোর জন্য চেষ্টা করেই গিয়েছি। কিন্ত প্রচণ্ড রোদের জন্য মানুষ খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। আমরা পুলিশকে খবর দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত এসে পৌঁছোয়নি। এদিকে রোদে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে গ্রাহকরাও বিরক্ত হয়ে উঠেন। উপস্থিত এক গ্রাহক বলেন, আমরা সকাল থেকে এখানে এসে লাইন দিয়েছি। একের পর এক মানুষ এসে লাইন দিচ্ছে। ব্যাংকের সামনে যেহেতু কোনও ছাউনি নেই, তাই কড়া রোদে দাঁড়িয়ে থেকে সবাই বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা সবাই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ছেন। সকলেই আগে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই একে অন্যের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যদি সামনে একটু ছাউনি করে দিত, তাহলে ভালো হত। কিন্তু সেটা না করায় মানুষের ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা কড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। তাই অনেক সময় ব্যাংকের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছেন।