বাণীব্রত চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি : অত্যাধুনিক মার্কেট কমপ্লেক্সে শৌচালয় নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। অথচ কমপ্লেক্সের একাংশের দোকানে ব্যবসা শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্যবসায়ী এবং বাজারে আসা সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে কমপ্লেক্সের ফাঁকা ঘরগুলিতে শৌচকর্ম সারছেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ কমপ্লেক্সে আসা ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। য়দিও কমপ্লেক্সের নির্মাণকারী জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। অন্যদিকে নির্মাণ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মার্কেট কমপ্লেক্সে ব্লক টয়লেট নির্মাণের জন্য স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনও সেই অংশ ফাঁকা পাওয়া যায়নি।
২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময় জেলা পরিষদের উদ্যোগে ময়নাগুড়ি নতুন বাজারে অত্যাধুনিক ওই মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এই কাজে ৮ কোটি ৩৬ লক্ষ ৩৬ হাজার ২২৯ টাকা ব্যয় হবার কথা। কমপ্লেক্সে ৪০০’র বেশি দোকান তৈরির কথা, যার মধ্যে প্রায় ৩৫০টি ঘর ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। তারমধ্যে কিছু দোকানে ব্যবসা শুরু হয়ে গেলেও এখনও কমপ্লেক্সে শৌচালয় নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। যার ফলে কমপ্লেক্সের বিভিন্ন অংশেই শৌচকর্ম করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী সুবিমল মল্লিক বলেন, শৌচালয় নির্মাণ না করেই অধিকাংশ দোকান চালু করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখনও যে ঘরগুলি নির্মাণ করা হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে সকলে শৌচকর্ম সারছেন।
ব্যবসায়ী পল্লব সরকারের বক্তব্য, কোন পরিকল্পনার ভিত্তিতে এমন কাজ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। স্থানীয় বাসিন্দা পিনাকী বর বলেন, নতুন ঘরগুলির সামনেই যাওয়া যায় না। গোটা কমপ্লেক্সে দুর্গন্ধ আর দূষণ ছড়াচ্ছে। ব্যবসায়ী কানাই সাহা বলেন, আমরা ব্যবসায়ী সমিতিকে এই সমস্যার কথা জানিয়েছি। নতুন বাজার ওয়েলফেযার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সিদ্ধার্থ সরকার বলেন, মার্কেট কমপ্লেক্সের উত্তর-পূর্ব কোণে জায়গা রয়েছে। সেখানে ব্লক টয়লেট এবং জলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে সেখানে একটি বৈধ মদের দোকান রয়েছে। দোকানটিকে নিয়ম অনুয়ায়ী স্থানান্তরিত করার আবেদন জানানো হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া চলছে। তাঁর আশ্বাস, পরবর্তীতে শৌচাগার এবং জল নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।
এ প্রসঙ্গে ময়নাগুড়ি-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সুভাষ বসু বলেন, আমরা বাড়িতে সবার আগে শৌচালয় নির্মাণ করি। এক্ষেত্রে উলটপুরাণ। আসলে কোনও সুষ্ঠু পরিকল্পনা নেই। করলেই হয়ে গেল এই আর কী। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। সবমিলিয়ে প্রায় এক হাজার ব্যবসায়ী এবং কর্মচারী রয়েছেন। অথচ কোনও শৌচাগার নেই। তবে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ বলেন, কিছু সমস্যা রয়েছে একথা সঠিক। তবে আমি নিজে গিয়ে সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।