নয়াদিল্লি: আবারও চড়া মেজাজে লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। বৃহস্পতিবার লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন আচমকাই ভেসে এল সতর্কবার্তা- ‘লোকসভা অধ্যক্ষ বা অধ্যক্ষের পদ নিয়ে কোন টুইট করা যাবে না’, গুরুগম্ভীর মুখে জানালেন কোটা-রাজস্থানের সাংসদ ও লোকসভা স্পিকার বিড়লা৷ অধ্যক্ষের এমন ‘হুমকি’তে রীতিমতো চমকে যান উপস্থিত সাংসদেরা। যদিও সুনির্দিষ্ট কারোর কথা উল্লেখ করে এ-কথা বলেননি ওম বিড়লা, তবু পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের মতে বিড়লার এই ‘সাবধানবাণী’ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র(Mahua Moitra)-এর উদ্দেশ্য করেই বলেছেন স্পিকার।
বৃহস্পতিবার লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন অ-সামরিক বিমান পরিষেবা মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিতে উঠে দাঁড়ান তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মহুয়ার প্রশ্ন ছিল আন্তর্জাতিক উড়ানে যাত্রী পরিষেবা আরও কী ভাবে উন্নত করা যায় সে নিয়ে, যার যথাসাধ্য উত্তরও দেন সিন্ধিয়া৷ মহুয়ার প্রশ্নের মাঝেই তাঁকে থামিয়ে ওম বিড়লা। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় স্পিকার বলেন, ‘একটি জরুরী কথা বলার আছে৷ আমি খবর পেয়েছি কিছু কিছু সাংসদ টুইটারে লেখেন স্পিকার তাঁদের বক্তব্য রাখার সুযোগ দেন না। এটা ঠিক নয়। আমি আমার সাধ্যমত সকলকেই বক্তব্য রাখতে সুযোগ দিয়ে থাকি৷’ তিনি এও বলেন, ‘স্পিকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঠিক না৷ এতে ভুলবার্তা যেতে পারে।’ তাঁর স্পষ্ট বার্তা – ‘লোকসভা অধ্যক্ষ বা অধ্যক্ষের পদ নিয়ে কোন টুইট করা যাবে না।’ তাঁর এই মন্তব্যে চমকে ওঠেন অনেকেই।
বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ মনে করছেন, এদিন সরাসরি কারও নাম উচ্চারণ না করলেও, ওম বিড়লা নিশানা সেধেছিলেন মহুয়া মৈত্রর উদ্দেশ্যে। গত বাদল অধিবেশনে মহুয়ার একটি বিতর্কিত টুইট নিয়ে যথেষ্ট হাঙ্গামা হয়েছিল যা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন অধ্যক্ষ বিড়লা স্বয়ং। এদিন সুযোগ পেয়েই, কারোর নাম না নিয়েই “স্পিকারকে নিয়ে টুইটে লেখালেখি বন্ধ করুন” বার্তা দিলেন তিনি। স্পিকারের এহেন মন্তব্যে হকচকিয়ে যান মহুয়াও। হাত নেড়ে ইশারায় বোঝাতে চান, তিনি ‘নির্দোষ’। অবশ্য এ নিয়ে আর কথা বাড়াননি বিড়লা। পরে অবশ্য স্পিকারের কথার সূত্র ধরে ফের টুইট করেন মহুয়া। কিঞ্চিৎ রসিকতার সুরে বলেন, ‘শ্রদ্ধেয় স্পিকার আমায় প্রশ্ন রাখার সুযোগ দিয়েছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ৷ আমি তাঁকে ধন্যবাদ দিতে একটা সুন্দর টুইট করব বলে কথা দিয়েছিলাম। তাই আন্তরিক ধন্যবাদ।’ বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেন, ‘স্পিকার সাহেব মানা করার পরেও তাঁকে নিয়ে ইচ্ছাকৃত টুইট তৃণমূলনেত্রীর, যা পরোক্ষে স্পিকারকেই কটাক্ষ করে…এত ঔদ্ধত্য পান কোথা থেকে মহুয়া? আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’