নাগরাকাটা: দক্ষিণবঙ্গে এখন তাপপ্রবাহ চলছে। সেখানকার একাধিক জেলার স্কুলগুলিতে ইতিমধ্যেই সকালে ক্লাস চালু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে অবশ্য এখনও ততটাও খারাপ পরিস্থিতি নয়। তা সত্ত্বেও কালিম্পং ও দার্জিলিং জেলার জিটিএ এলাকাভুক্ত স্থান বাদে বাকি জায়গার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলিতেও প্রয়োজনে সকালে ক্লাস চালু হতে পারে। ডিআইদের এমন পরামর্শ দিয়েছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর।
জলপাইগুড়ির ডিআই (প্রাথমিক) শ্যামলচন্দ্র রায় বলেন, ‘বিষয়টি নিযে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ওই জেলারই ডিআই (মাধ্যমিক) বালিকা গোলে বলেন, ‘শিক্ষা দপ্তরের চিঠি পেয়েছি। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। প্রশাসনের সঙ্গে এব্যাপারে আলোচনা করা হবে।’ একইরকমভাবে ডিআইযে সঙ্গে কথা বলে বিষযটি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন শিলিগুড়ি শিক্ষাজেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপকুমার রায়। তিনি বলেন, পরিস্থিতি খতিযে দেখা হচ্ছে। কোথাও স্কুলের পঠনপাঠন সকালে নিয়ে আসার প্রযোজন রয়েছে কি না, তা জানতে চেয়ে বুধবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রয়োজনীয়তার নিরিখে প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক, হাইস্কুলগুলির পাশাপাশি এসএসকে-এমএসকেগুলির পঠনপাঠনও সকালের শিফটে নিয়ে আসা হতে পারে বলে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রয়োজনীযতার পাশাপাশি সেক্ষেত্রে বিষয়টি সর্বত্র সম্ভব কি না, সেটাও অবশ্য ভেবে দেখার বিষয়। এমন অনেক স্কুল থাকতেই পারে, যেখানে দুপুরের শিফট থেকে সকালের শিফটে স্কুল চালানো সম্ভব নয়। সেসব ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের তাপপ্রবাহের হাত থেকে বাঁচাতে স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিকদের থেকে পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি যাবতীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের পক্ষ থেকে তাপপ্রবাহের ওপর যে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে, সেটা মেনে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে জেলাগুলিকে। উত্তরে এখনও তীব্র গরম পড়েনি। কিন্তু এর মধ্যেই ডুয়ার্সের চা বলয়ে প্রাথমিক স্কুলগুলির ক্লাস সকালে করার দাবি তোলা হয়েছে। এমনকি অভিভাবক মহলের পাশাপাশি শিক্ষকরাও কিন্তু এই দাবিকে সমর্থন করেছেন।
সোমবারই এই দাবির কথা নাগরাকাটার অবর বিদ্যালয পরিদর্শকের কাছে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নাগরাকাটা শাখা। এলাকার জিতি চা বাগানের একটি প্রাথমিক স্কুলের টিচার ইনচার্জ ধীরাজ সিং বলেন, সম্প্রতি অভিভাবক-শিক্ষক বৈঠক ছিল। আপাতত স্কুল যাতে সকালে করা হয় এমন দাবির কথা সেখানে জানান অভিভাবকরা। চ্যাংমারি চা বাগানের একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম বড়ুযা বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, সকালে স্কুল হলে পড়ুযা সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। এর অন্যতম কারণ হল- চা বাগানের শ্রমিকরা সকাল ৭টার মধ্যে কাজে চলে যান। সেসময়ে বাড়ির ছেলেমেয়েদেরও তাঁরা স্কুলে পাঠিয়ে দেন। সাড়ে ১০টা থেকে স্কুল হলে মাঝের ওই সময়টুকু পড়ুযারা ঘুরে বেড়ায়। পরে অনেকে আর স্কুলমুখী হয় না।
আরও পড়ুন : স্কুল মাঠে জমছে এক হাঁটু জল, সমস্যায় পড়ুয়া সহ শিক্ষকরা