গঙ্গারামপুর: নার্সিং পড়ুয়া খুনের প্রায় চারদিন পর রুমমেট বিক্রমকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বুধবার ধৃত বিক্রম সরকারকে গঙ্গারামপুর থেকে অশোকনগরের নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনায় থমথমে চেহারা নিয়েছে গঙ্গারামপুর(Gangarampur) থানার যাদববাটি ও বাটুলপাড়া এলাকা।
গঙ্গারামপুর ব্লকের নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের যাদববাটি বাটুলপাড়ার বাসিন্দা দিলীপ সরকার। তাঁর বড় ছেলে উদ্ধব সরকার। ছোট থেকে উদ্ধব মেধাবী ছাত্র। বিজ্ঞান নিয়ে লেখাপড়া তাঁর। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ১ নভেম্বর উত্তর ২৪ পরগণার অশোকনগরে নার্সিং পড়তে গিয়েছিল উদ্ধব। তাঁর সঙ্গে নার্সিং পড়তে গিয়েছিল গঙ্গারামপুরের গৌরব বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ হালদার ও যাদববাটি বিক্রম সরকার। তারা চারজন একটি মেসে থাকত। ৪ ডিসেস্বর বিক্রমের দাদার বিয়ে। বিশ্বজিৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় কয়েকদিন আগে গঙ্গারামপুরের বাড়িতে চলে আসে। গৌরবও শনিবার আত্মীয় বাড়ি গিয়েছিল। এর মাঝেই রবিবার সকালে মেসের ঘরের খাটের নীচ থেকে উদ্ধবের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, বিক্রম মেসের ঘরে তালা মেরে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়ে। বিক্রমের তাড়াহুড়ো দেখে মেস মালিকের সন্দেহ হলে তালা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকলে খাটের নীচ থেকে উদ্ধবের নলিকাটা দেহ দেখতে পান। খবর যায় অশোকনগর থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধবের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে নিঁখোজ হয়ে যায় রুমমেট বিক্রম সরকার। সোমবার অশোকনগরে উদ্ধবের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হয়। মঙ্গলবার সকালে উদ্ধবের কফিনবন্দি দেহ নিয়ে আসা হয় গঙ্গারামপুরের যাদববাটি বাটুলপাড়ার বাড়িতে।
এরপরেই গ্রামবাসীরা রুমমেট বিক্রম তথা গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্য উর্মিলা সরকারের বাড়ির সামনে উদ্ধবের মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে গঙ্গারামপুর থানার আইসি শান্তনু মিত্রের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও সিভিক ভলান্টিয়ার ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ঘটনাস্থলে যান গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য। পরিস্থিতি সামাল দিতে বংশীহারী থানার আইসি মনোজিৎ সরকারের নেতৃত্বেও বিশাল পুলিশ বাহিনী আনা হয়। তপন থানা থেকেও পুলিশকর্মীরা ছুটে যান। নামানো হয় র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর পুলিশের আশ্বাসে সরিয়ে নেওয়া মৃতদেহ। ঘটনার আঁচ পেতে গা ঢাকা দেয় বিক্রমের পরিবার।
এদিকে নার্সিং পড়ুয়া উদ্ধবের খুনের পর থেকে রুমমেট বিক্রম নিঁখোজ হওয়ায় শোরগোল পড়ে। রুমমেট বিক্রমকে খুঁজতে অশোকনগর থানার পুলিশকর্মীরা গঙ্গারামপুরে ছুটে আসে। এরপর এদিন গঙ্গারামপুর ও অশোকনগর থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিক্রমকে গ্রেপ্তার করে। এদিন গঙ্গারামপুর থেকে গ্রেপ্তারের পর বিক্রমকে নিয়ে পুলিশকর্মীরা অশোকনগর থানার উদ্দেশ্য রওনা দেন।