সামসী: চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ছ’জন স্বাস্থ্যকর্মী একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই ঘটনায় ভয়ঙ্করভাবে চাঁচলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঠিক তেমনি এই ছয়জন আক্রান্ত সহ উত্তর মালদায় মোট আক্রান্ত ২২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এরফলে জেলা স্বাস্থ্যমহলেও উদ্বেগ বেড়েছে।
চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সূত্রে খবর,গত ৬ জুলাই ওই ছয় স্বাস্থ্যকর্মী(নার্স)-র লালার নমুনা নেওয়া হয়েছিল। নমুনা নেওয়ার পরেও তাঁরা ওই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে কর্তব্যরত ছিলেন। শনিবার রাতে তাঁদের লালা নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওই ছয় স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে একজন পুরুষ,বাকিরা মহিলা নার্স বলে জানাগিয়েছে। এদিকে উত্তর মালদায় মোট আক্রান্ত ২২ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে রতুয়া ১–র ছয়জন, রতুয়া ২-র ১১ জন এবং চাঁচল ১ ব্লকের মোট পাঁচ জন রয়েছেন। আরও একটি বিষয় জানাগিয়েছে যে, ওই ছয় স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে একজন নার্স আবার সামসীতে নিজের বাড়িতেই থাকতেন। তার সংস্পের্শ এসে তার স্বামীও আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আবার ব্যবসায়ী।
স্বাস্থ্যমহলেরই একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তাদের কেন কাজ করানো হল? এক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা অনেকটাই বাড়বে বলে ধারণা। চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার ডঃ ওয়াসিম রানা জানান, চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেরই লালার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে কেউ সংক্রমিত আছেন কি না তা বোঝা যায়। এমন পরীক্ষা আগামীতেও চলবে বলে জানান ডঃ ওয়াসিম রানা।
চাঁচল ১ ব্লকের বিএমওএইচ ডঃ আখতার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা পজিটিভ মিললেও বর্তমানে তাদের শরীরে কোনও লক্ষণ না থাকায় হাসপাতালের নিজস্ব কোয়ার্টারের কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। নতুন করে যাতে আর করোনা আক্রান্ত না হন, তার জন্য পুরো হাসপাতালে স্যানিটাইজ করার কাজ শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের কড়া লকডাউন জারির দাবিতে সরব হয়েছেন ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজ। তবে, রবিবার চাঁচলের আওয়াজ নামে এক নাগরিক কমিটির তরফে কড়াকড়ি চালু করার জন্য চাঁচল ১ বিডিও-র কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। যদিও চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির তরফে আগেই সেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
চাঁচলের আওয়াজ নাগরিক কমিটির তরফে অভিজিত দাস বলেন, লকডাউন কড়াকড়ি না হলে পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে যাবে। তাই ফের চাঁচলে আংশিক লকডাউনের দাবি জানানো হয়েছে। চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রাণগোপাল পোদ্দার বলেন, আমরা প্রশাসনকে কিছু ক্ষেত্রে কড়াকড়ি তথা রাশ টানার আবেদন জানিয়েছি। এবার বাকিটা প্রশাসনের বিষয়।
চাঁচলের মহকুমা শাসক সব্যসাচী রায় বলেন, চাঁচলে কড়াকড়ি বা আংশিক লকডাউনের দাবি অনেকেই জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সভা ডেকে সব খতিয়ে দেখে সব খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চাঁচল ছাড়াও সামসী,রতুয়া ১ ও ২ প্রভৃতি এলাকায় আংশিক লকডাউনের বিষয়টিও ভাবা হতে পারে।