জলপাইগুড়ি: হাতের প্লাস্টার কাটাতে হবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বাইরের ‘দোকানে’। রোগীকে এমনই নিদান দেওয়ার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) মেডিকেল কলেজের অধীনে থাকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ। ভিডিও ভাইরাল হতেই হইচই পড়ে গিয়েছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে। সেই সঙ্গে উঠছে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন।
মাস দেড়েক আগে ভাঙা হাত সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে সম্পূর্ণ বিনা খরচে প্লাস্টার করিয়েছিলেন নয়াবস্তির বাসিন্দা গোবিন্দ দত্ত রায়। এদিন দুপুরে হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁকে দেখা গেল নিজেই হাতের প্লাস্টার টেনে টেনে খুলছেন। তাঁকে ওই অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করেন, সামনে হাসপাতাল থাকতে কেন তিনি নিজেই প্লাস্টার খুলছেন? উত্তরে গোবিন্দ যা বললেন তা শুনে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ ওই ব্যক্তির। গোবিন্দবাবুর সঙ্গে কথা বলার সময় নিজের মোবাইলে পুরোটা ভিডিও করেন তিনি। পরবর্তীতে ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওতে গোবিন্দবাবুকে বলতে শোনা গেল, দেড় মাস বাদে এদিন তিনি হাতের প্লাস্টার কাটতে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এসেছিলেন। যেখানে এই প্লাস্টার কাটা হয় সেই বিভাগে যাওয়ার পর সেখানকার এক কর্মী তাঁকে বলেন বাইরের ‘দোকান’ থেকে প্লাস্টার কেটে নিতে। গোবিন্দবাবু ওই কর্মীর কথা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দোকানে যোগাযোগ করলে প্লাস্টার কাটার জন্য তাঁর কাছ থেকে দেড়শো টাকা দাবি করা হয়। তাঁর কাছে এত টাকা না থাকায় শেষ পর্যন্ত তিনি নিজেই হাতের প্লাস্টার খোলার সিদ্ধান্ত নেন বলে ভিডিওতে জানান গোবিন্দ। প্রশ্ন উঠেছে কে গোবিন্দকে ‘দোকানে’ গিয়ে প্লাস্টার কাটার কথা বললেন? তিনি কি আদৌ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী নাকি দালাল? কারণে দিন কয়েক আগে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভেতরেই এক দাদালকে ধরেছিলেন খোদ হাসপাতালের কর্মীরাই। সেই দিন ঘটনার নেপথ্যে উঠে এসেছিল শহরের একাংশ বেসরকারি ল্যাবরেটরির হয়ে ওই দালাল চক্রটি হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। গোবিন্দবাবুর এদিনের ঘটনার ক্ষেত্রেও তেমনটাই কিছু হয়েছে কিনা সেই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি কল্যাণ খান বলেন, ‘ঘটনার অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। যদি কোথাও এমন সমস্যায় পড়েন রোগীরা তাঁদের অনুরোধ করব একবার অন্তত রোগী সহায়তা কেন্দ্রে গিয়ে কথা বলতে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার সম্মুখীন কাউকে হতে না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।‘
আরও পড়ুন: Rescue Turtle | মাছ ধরতে গিয়ে মিলল কচ্ছপ, তুলে দেওয়া হল বন দপ্তরের হাতে