ফাঁসিদেওয়া, ৯ ফেব্রুয়ারিঃ বিধানসভা ভোটের মুখে এক বছর ধরে চালু প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাতেই রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা এখন তুঙ্গে। সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কলকাতা নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে খেলাশ্রী প্রকল্পের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের জালাস নিজাম তারা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিরামজোতে চালু হওয়া মাংস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন। বিজেপির সহ একাধিক রাজনৈতিক দলের মন্তব্য, প্রায় ১ বছর আগে থেকে ওই প্রকল্পটি চালু রয়েছে। ভোটের আগে প্রকল্পের উদ্বোধন করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ফয়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিনের অনুষ্ঠানে ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী, ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহমজুমদার, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সদ্য প্রাক্তণ সদস্য মহম্মদ আইনুল হক, ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদ্য প্রাক্তণ পুর্ত কর্মাধ্যক্ষ চন্দ্রমোহন রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২০১৯ সাল নাগাদ রাজ্য প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের অধীনে থাকা প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন নিগমের ফাঁসিদেওয়া মাংস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছিল বলে খবর। এরপর থেকে সেই কেন্দ্রে মুরগির মাংস প্রক্রিয়াকরণের কাজ চলছিল। তবে, এবারে সেখানে নতুন করে শুকরের মাংস প্রক্রিয়াকরণের বিভাগ চালু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র দৈনিক ১১ মেট্রিক টন মুরগি এবং ৫ মেট্রিক টন শুকরের মাংস প্রক্রিয়াকরণের সুবিধা রয়েছে। ইতিমধ্যেই, দীর্ঘ প্রায় ১ বছর ধরে সেখানে ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করে চলেছেন। এর থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে ওই কারখানা বহু আগেই চালু হয়ে গিয়েছে। তবে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী সেটির উদ্বোধন করেন। আর সেই বিষয়টি নিয়েই রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল। হাতিরামজোতের এই মাংস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি নিয়ে এর আগেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে, এবারে রাজনৈতিক সমালোচনার বড় অংশ হয়ে উঠেছে গ্রামীণ এলাকার ওই প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি।
প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের ইনচার্জ এ.কে. বিশ্বাস বলেন, আমাদের মাংসের চাহিদা রয়েছে। এখন দুইটি আলাদা ইউনিট করা হল। পণ্য উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও যাচ্ছে। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহমজুমদার জানান, এই প্রকল্প আগামীতে আরও বড় হলে, স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের বড় জায়গা তৈরি হবে। অন্যদিকে, ফাঁসিদেওয়া মণ্ডল বিজেপি সভাপতি অনিল ঘোষ বলেন, ওই মাংস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি ১ বছর আগেই চালু করা হয়েছে। অথচ, ভোটের আগে সেই প্রকল্প উদ্বোধন করে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। আর কিছুই নয়। এখানে ভোটের রাজনীতি করা হচ্ছে। তবে, এর আগেই ওই কারখানার উদ্বোধন করার কথা থাকলেও, বিভিন্ন কারণে তা বাতিল করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সদ্য প্রাক্তণ সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেসের ফাঁসিদেওয়া সাংগঠনিক ১ নম্বর ব্লক সভাপতি মহম্মদ আইনুল হক। তিনি বলেন, ভোট আমাদের কাছে বড় বিষয় নয়। মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে এতেই আমরা খুশি।