পুরাতন মালদা : জলের জারে করে চোলাই পাচার করতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ল দুই যুবক। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার নলডুবি ঝাঁঝরা মোড়ের কাছে। অন্যদিকে লকডাউনের মাঝে মাদক নিতে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়লেন উপপ্রধানের স্বামী। ঘটনাটি পুরাতন মালদার সাহাপুরের।
একে লকডাউন, তার ওপর রবিবার। রাস্তায় যানবাহনের দেখা নেই তেমন একটা। দুপুর তখন ১টা। পুরাতন মালদার নারায়ণপুরের দিক থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে তীব্র গতিতে স্কুটি নিয়ে এগিয়ে আসছিলেন দুই যুবক। স্কুটির পাদানিতে রাখা জলের জার। লকডাউনে জলের জার পরিবহনে বিশেষ ছাড় রয়েছে। তাই প্রাথমিকভাবে ওই যুবকদের দেখে তেমন একটা সন্দেহ হয়নি নলডুবি ঝাঁঝরা মোড়ে নাকা চেকিংয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের। তবে নাকা চেকিংয়ের গার্ড রেলের কাছে স্কুটি থামাতেই সন্দেহ হয় পুলিশের।
চোলাইয়ের কটু গন্ধে পুলিশের বুঝতে দেরি হয়নি কিছু একটা গড়বড় রয়েছে। পুলিশকে দেখে ততক্ষণে স্কুটি ও জলের জার ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন ওই দুই যুবক। যদিও আকণ্ঠ পান করে থাকায় টলোমলো পায়ে বেশি দূর পালাতে পারেনি তারা। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা ধরে ফেলতেই মাটিতে গড়াগড়ি খেতে থাকে ওই দুই যুবক। তাদের জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জানতে পারে লকডাউনের বাজারে দীর্ঘদিন তৃষ্ণার্ত ছিলেন তারা। বিলিতি না মেলায় গলা ভেজাতে দিশি চোলাইয়ের সন্ধানে গিয়ে আকণ্ঠ পান করে ফেলেছেন তারা।
তবে জলের জার কেন? পুলিশের এই প্রশ্নের উত্তরে ওই দুই যুবক জানান, তাতে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশকর্মীদের। তারা জানায়, পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই জলের জারে করে চোলাই মদ নিয়ে যাচ্ছেন তারা। ওই দুই যুবকের বাড়ি ইংরেজবাজারের ঘোড়াপীড় এলাকায়। সেখানে কিছু সুরাপ্রেমীদের চাহিদার যোগান দিতেই তারা জলের জারে চোলাই নিয়ে যাচ্ছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। এরপরই চোলাই ভর্তি জার ও স্কুটি সমেত দুই যুবককে আটক করে মালদা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে লকডাউনের মাঝে মাদক নিতে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেলেন সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্বামী। ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় বালা সাহাপুর এলাকায়। যদিও ওই ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন বিজেপি শাসিত সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। গ্রামবাসীরা অভিযোগ জানান, বালা সাহাপুরের একটি আমবাগানে বসে দু’তিন জনের সঙ্গে নিষিদ্ধ মাদক সেবন করছিলেন উপপ্রধানের স্বামী। খবর পেয়ে গ্রামের কয়েকজন যুবক তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। বিষয়টি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
ওই ঘটনার জন্য উপপ্রধানের কাছে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। অভিযোগ ওই সময় উপপ্রধান মন্দিরা মণ্ডল তাদের শাসাতে থাকেন। যদিও উপপ্রধান মাদক সেবনের ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করে নিলেও শাসানোর অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তার স্বামী মাদকাসক্ত জানিয়ে তিনি জানান, অবিলম্বে স্বামীকে নেশা মুক্তি কেন্দ্রে পাঠাবেন তিনি।
এদিকে একজন জনপ্রতিনিধির স্বামীর এমন আচরণ জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে বলে জানান পুরাতন মালদা গ্রামীণ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি জহর ঘোষ। তিনি জানান, এখন রাজ্য তথা দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। এই সময় অযথা বাড়ির বাইরে বেরোনোই উচিত নয়। অথচ একজন জনপ্রতিনিধির স্বামী শুধু বাইরেই বের হননি, উপরন্তু মাদক সেবন করছেন। এটা সাধারণ মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। জনপ্রতিনিধি ও তাদের পরিবারকে আরও সংযত আচরণ করা উচিত।