বালুরঘাট : লকডাউন কার্যকর রাখতে এবার বালুরঘাটের রাস্তায নামলেন খোদ পুলিশ সুপার। লাঠির পরিবর্তে মানুষকে বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠালেন পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। সঙ্গে ছিল বাহিনী।তাঁদের হাতে লাঠিও নজরে এল না। ডান্ডার পরিবর্তে ঠান্ডা মাথায পথচলতি মানুষকে বাড়ি ফেরানো হল। পুলিশের এমন গান্ধিগিরিতে মুগ্ধ বাসিন্দারা। বিনা কারণে রাস্তায় বের হওয়া লোকজনকে মানবিকতার ও সচেতনতার পাঠ দেওয়া হল। অভিযোগ উঠছিল, লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হচ্ছেন বালুরঘাটের সাধারণ মানুষ। সোমবার দুপুরে বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালান পুলিশ সুপার।
করোনা মোকাবিলায় গোটা দেশজুড়ে গত ২৩ মার্চ থেকে চলছে লকডাউন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠছে, লকডাউনকে ভ্রুক্ষেপ না করেই বালুরঘাটে অযথা রাস্তায় বের হচ্ছেন কিছু মানুষ। কেউ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার অছিলায়, আবার কেউ বা নেহাতই ফাঁকা শহর উপভোগ করতে। প্রথমের দিকে লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশের তরফে বিভিন্ন এলাকায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তবে বিগত কয়েকদিন থেকে সেরকমভাবে আর সক্রিয় নেই পুলিশ প্রশাসন বলে অভিযোগ উঠছিল। এরপরই সোমবার ফের মাঠে নামেন জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। এদিন বালুরঘাটের ব্যস্ততম বাসস্ট্যান্ড চত্বরে অভিযান চালান তিনি।
এদিনের অভিযানে পুলিশ সুপারের সঙ্গে ছিলেন ডিএসপি (সদর) ধীমান মিত্র, বালুরঘাট থানার আইসি গৌতম রায় সহ বিশাল বাহিনী। তবে এদিন পুলিশের হাতে লাঠি ছিল না। করজোড়ে সাধারণ মানুষকে করোনা নিয়ে সতর্ক করেন পুলিশকর্তারা। যাঁরা অকারণে রাস্তায় বেরিয়েছেন তাঁদের বোঝানো হয় করোনা কতটা ভয়ংকর। একটু ভুলের জন্য কত বড় ক্ষতি হতে পারে নিজের ও আপনজনের। তাই অহেতুক রাস্তায না বেরিযে ঘরে থাকার আবেদন করেন পুলিশকর্মীরা।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘সবসময বল প্রযোগ করে সমস্যার সমাধান হয় না। আমরা বল প্রযোগের পরিবর্তে অনুরোধের পথেই হাঁটছি। নাগরিকদের মধ্যে মানবিক দিক জাগিয়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষকে করোনা সম্পর্কে আরও সচেতন করতে হবে। সোমবার যাঁরা অহেতুক বাইরে বেরিয়েছেন তাঁদের বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয। তাঁদের ঘরে থেকেই সুস্থ থাকার আবেদন করা হয়।’ পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘শুধু আজ রাস্তায় বেরিয়েছি, এমনটা নয়। প্রত্যেকদিনই কোনও না কোনও জায়গায় যাচ্ছি। লকডাউন সম্পূর্ণ সফল করতে এটি অবিরাম প্রক্রিযা। জেলায লকডাউন কতটা কার্যকর হচ্ছে তা প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করছি।’
ছবি- বালুরঘাটের পথে পুলিশ সুপার।
তথ্য-পঙ্কজ মহন্ত, ছবি- মাজিদুর সরদার