হরিশ্চন্দ্রপুর: বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তে নতুন মোড়। এবারে বন্যা ত্রাণ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামণি সাহা। হাইকোর্টের নির্দেশে তার বাড়িতে বেশকিছু স্থাবর সম্পত্তি সিজ করল পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরেই শাসকদলের প্রধান সোনামণি সাহা পলাতক। ইতিমধ্যে হাইকোর্ট পলাতক প্রধানের নামে হুলিয়া জারিও করেছে। তারপরেও প্রধানের হদিস মেলেনি। এবার প্রধানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিল আদালত। আদালতের নির্দেশ পেয়ে প্রধানের বাড়ি থেকে কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্তও করল পুলিশ। কোর্টের নির্দেশে বাকি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
দুর্গতদের জন্য বরাদ্দ বন্যাত্রানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এফআইআর হলেও শাসকদলের প্রধানকে ধরতে পারেনি পুলিশ। দুই মাস এর বেশি সময় কেটে গেলেও প্রধান ধরা না পড়ায় এবার তাকে ধরতে হুলিয়া জারি করে আদালত। হুলিয়া জারির এক মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও প্রধান পলাতক থাকায় এবার তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে বন্যাত্রাণের টাকা লুঠের অভিযোগ ওঠে প্রধানের বিরুদ্ধে। প্রশাসন গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তারপর আদালত সক্রিয় হতেই দুমাস আগে প্রধান সোনামণি সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর করে প্রশাসন। তদন্তে বন্যাত্রানের ৭৬ লক্ষ টাকা লুঠ হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। প্রধানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গের মতো জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় মামলা হতেই গা ঢাকা দেয় প্রধান। বুধবার প্রধানের বাড়ি থেকে ওয়াসিং মেশিন, আলমারি ও কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বাড়িতে নজরদারির জন্য মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশও। পাশাপাশি প্রধানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘বিহার ও একাধিক জায়গায় হানা দিলেও প্রধানের খোঁজ মেলেনি। বিষয়টি আমরা আদালতে জানাই। আদালতের নির্দেশ মেনেই আমরা কাজ করছি।‘ বিরোধী দলনেতা তথা প্রধান মামলাকারী আব্দুল মান্নান জানান, যাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে তারা মূল অভিযুক্ত নয়। এর পিছনে বড় মাথা আছে। শাসকদলের অনেক বড় বড় নেতা এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত। প্রধান গ্রেপ্তার হলে তা সব প্রকাশ্যে চলে আসবে। তাই ইচ্ছা করেই প্রশাসন প্রধানকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। যদিও এ প্রসঙ্গে শাসকদলের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক প্রেসিডেন্ট মানিক দাস মুখ খুলতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে। শাসকদলের অঞ্চল চেয়ারম্যান জানান, তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। বিজেপি নেতা রুপেশ আগরওয়াল জানান, আইন এবং পুলিশ প্রশাসনের ওপর আমাদের ভরসা আছে।