রাঙ্গালিবাজনা: স্কুল পড়ুয়া মেয়েগুলির কারও বয়স সবে সতেরো, কারও বা ষোলো। এই সময়টা বেণী দুলিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা ওদের। কিন্তু ওদের কেউ কেউ এখন কোমরে আঁচল গুঁজে শ্বশুরবাড়িতে হেঁশেল সামলাচ্ছে। এদিকে, চা বলয়ে কিশোর-কিশোরীদের ভিনরাজ্যে পাড়ি দেওয়া নতুন কোনও ঘটনা নয়। চা বাগানে তাই ওঁত পেতে থাকে মানব পাচারচক্রের আড়কাঠিরা। পাচারচক্রের ফাঁদে পা দিয়ে ভিনরাজ্যে গিয়ে বারবার হাতবদল হতে হয়েছে কিশোরীদের, এমন ঘটনা বহুবার সামন এসেছে। আবার স্মার্টফোনেও ফাঁদ পাতছে বখাটে যুবকরা। প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে ঘর ছাড়ছে কিশোরীরা। এদিকে, যে ছেলেটির মাঠে ফুটবল নিয়ে ছোটার কথা, সে বুঁদ হয়ে আছে অনলাইনে গেমে। স্কুলে গেলেও থাকছে আনমনা। এনিয়ে পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি ছুটছেন স্কুল শিক্ষকরা। এবার তাদের সচেতন করতে পথে নামল আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। সোমবার ফালাকাটা থানার উদ্যোগে দেওগাঁও হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত হল সামাজিক সচেতনতা শিবির। ৮টি জ্বলন্ত সামাজিক সমস্যা ও সেগুলির প্রতিকার এদিন পড়ুয়াদের সামনে তুলে ধরেন ফালাকাটা থানার আইসি সনাতন সিংহ। পুলিশ সূত্রের খবর, মানব পাচার, গার্হস্থ্য হিংসা, বাল্যবিবাহ, গণপিটুনি, মদ ও মাদকদ্রব্য সেবন, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার, নিরাপদ ড্রাইভ ও সাইবার ক্রাইম নিয়ে এদিন পড়ুয়াদের সচেতন করা হয়।
এদিন ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ুয়াদের সামনে যেন মাস্টারমশাই হয়ে উঠেছিলেন ফালাকাটা থানার আইসি সনাতন সিংহ। পরে তিনি জানান, সমাজকে সচেতন করা পুলিশের অন্যতম দায়িত্ব। তাই এলাকার প্রতিটি স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কর্মসূচিতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের শামিল করার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
দেওগাঁও হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা বিধায়ক দীপক বর্মনের কথায়, স্মার্টফোনের অনেক ভালো দিক থাকলেও কম বয়সিদের অনেকেই এর প্রকৃত ব্যবহার না জানায় কিছুটা ক্ষতিও হয়েছে। কেউ কেউ প্রণয়ঘটিত সম্পর্কে জড়িয়েছে। এর ফলে বাল্যবিবাহও হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা পড়ুয়াদের সচেতন করার কাজ করে চলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।