প্রাণপ্রতিম পাল, কোচবিহার : কচুরিপানায় ভরে গিয়েছে ঝিল। পার্কের ভেতরে যেখানে-সেখানে পড়ে রয়েছে প্লাস্টিকের বোতল, আবর্জনা। শিশুদের মনোরঞ্জনের সরঞ্জাম খারাপ হয়ে রয়েছে। বিবর্ণ রাজবাড়ি পার্ক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন পর্যটকরা। বর্তমানে রাজবাড়ি পার্ক তার জৌলুস হারিয়ে ফেলায় হতাশ কোচবিহারবাসী। রাজবাড়ি পার্কের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড এখন বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, উদ্যানটি আগাছায় ছেয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, সবকিছু জেনেশুনেও উদাসীন রয়েছে জেলা প্রশাসন। কোচবিহারের ডিএফও বিমান বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ওই পার্কের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
১৯৯৮ সালে কোচবিহার রাজবাড়ির উত্তর অংশের বেশ কিছু জমি ও ঝিল নিয়ে রাজবাড়ি পার্ক তৈরি হয়েছিল। বন দপ্তর এই পার্ক তৈরি করলেও ২০০১ সালে কোচবিহার ইকো হেরিটেজ প্রিজারভেশন সোসাইটি গঠন করে তাদের হাতে এই উদ্যান পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। পদাধিকারবলে জেলাশাসক এই সোসাইটির সভাপতি। সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ডিএফও। এক সময় রাজবাড়ি পার্কে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেমের টানে প্রচুর পর্যটক ভিড় জমাতেন। পার্কের ঝুলন্ত সেতুতে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে দেখা যেত তাঁদের। আর এখন পার্কের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনি পার্কের ঝুলন্ত সেতুও বন্ধ।
পার্কের ঝিলের অবস্থা খুবই খারাপ। ফলে ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পার্কে ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছেন পর্যটকরা। সামান্য কিছু যুবক-যুবতি একান্তে সময় কাটাতে ওই পার্কে আসেন। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেমের জায়গায় আগাছা গজিয়েছে। পার্কের বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা চোখে পড়বে। রাজবাড়ি পার্কে ঘুরতে আসা এক যুবক বলেন, পার্কের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম বেহাল হয়ে রয়েছে। পার্কের মধ্যে আকর্ষণীয় কিছুই নেই। রাজবাড়ি পার্কের এই দুরবস্থা কাটাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা দরকার। তবে কম লোকজন আসায় এখানে একান্তে সময় কাটানো যায়।
রাজবাড়ি পার্কে প্রায় ৩০ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এমনই এক অস্থায়ী কর্মী ফিরোজ আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা রাজবাড়ি পার্কে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে চলছি। আমাদের এই পার্ক সংস্কারের অভাবে শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে। পার্কের টিকিট বিক্রি করে যা আয় হয়, তাতে সবার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। মাত্র ৯৮ টাকা প্রতিদিনের হাজিরা পাই। পার্কের মূল আকর্ষণ লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। পার্কটি সংস্কার করা হলে পর্যটকের ঢল যেমন নামবে, তেমনি আমাদেরও রুজিরুটিতে টান পড়বে না।