দেবদর্শন চন্দ, কোচবিহার: একদিকে করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। অপরদিকে, এই পরিস্থিতিতেই হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার নিকাশি বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ২০ নম্বর ওয়ার্ড। অভিযোগ, সেখানের হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই নিকাশি বেহাল হয়ে থাকলেও পুরসভার কোনওরকম হেলদোল নেই। এই পরিস্থিতিতে মশাবাহিত রোগের আশঙ্কা করছেন হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের অনেকেই। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতাল সংলগ্ন নিকাশিতে আবর্জনা পড়ে রয়েছে। শুধু হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকাই নয়, শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় একইরকম অবস্থা হয়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও খবর: লকডাউন নিয়ে কড়াকড়ি পাহাড়ে
কোচবিহার সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে কোচবিহার শহর ও শহর সংলগ্ন জেলাগুলি থেকেও মানুষরা চিকিৎসার জন্য আসেন। হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় নিকাশির এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনরা।
তারা জানান, নিকাশি পরিষ্কার না হওয়ায় নর্দমা দিয়ে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে ওই এলাকায় থাকা দায় হয়ে গিয়েছে। মশা মাছির উপদ্রব সবসময়ই। পুরসভার চোখের সামনে এসব হওয়া সত্ত্বেও তাদের কোনও হেলদোল নেই।
এদিকে শীতের প্রকোপ কমতেই ফের মশা-মাছির উপদ্রব শুরু হয়েছে। আর মশার উপদ্রবে নাকাল হচ্ছেন শহরের বাসিন্দারা। শহরের বিভিন্ন নিকাশির বেহাল দশার জন্য এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এদিকে, হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা হওয়ায় মশার উপদ্রব বেশি রয়েছে বলে রোগীর আত্মীয়রা জানিয়েছেন। শহরবাসী একাংশ অবশ্য জানিয়েছেন, শীতের প্রকোপ কমতেই মশার উৎপাত শুরু হয়েছে। ফলে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ ছড়ানোরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেকারনে শহরের অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি হাসপাতাল সংলগ্ন গোটা এলাকা সবসময়ই পরিষ্কার রাখা উচিৎ।
কোচবিহার পুরসভার তরফে মশা মারার কামান ব্যবহার করা হলেও নিকাশি নালার আবর্জনা সেভাবে সাফাই করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ শহরের বাসিন্দাদের। রোগীর পরিজনদের পাশাপাশি শহরবাসীও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা প্রতিদিন পরিষ্কার করার দাবি তুলেছেন।
আরও খবর: লকডাউনের মাঝেই শর্টসার্কিট থেকে আগুন, ভস্মীভূত বাড়ি
এক রোগীর আত্মীয় শুভ দাস বলেন, ‘কোচবিহার সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সংলগ্ন নিকাশি বেহাল হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতি থাকা সত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা ও নিকাশি প্রতিদিন পরিষ্কার করা এবং জীবাণুনাশক স্প্রে করার দাবি জানাচ্ছি।’
সেখানে থাকা অপর এক ব্যক্তি মনা পাল বলেন, ‘হাসপাতাল সংলগ্ন নিকাশির পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিকাশিগুলি মশার আতুড় ঘরে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার উচিৎ নিকাশি নালাগুলি সর্বদা পরিষ্কার রাখা।’
এই বিষয়ে ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার গীতা উপাধ্যায় বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার রাখা উচিৎ। সমস্যার বিষয়ে আমি পুরসভায় জানাব।’
কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিং বলেন, ‘পুরসভার তরফে নিয়মিত শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিকাশি পরিষ্কার করা হচ্ছে। পাশাপাশি মশা বাহিত রোগের প্রকোপ ঠেকাতে শহরের নিকাশি নালাগুলিকেও সাফাই করার কাজ শুরু করা হয়েছে। হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনরাই নিকাশিগুলিকে অপরিষ্কার করে রাখছে। সেখানে আবর্জনা ফেলছে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষকেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।’