নয়াদিল্লি: সংসদে উঠল কুখ্যাত নেতাই গণহত্যা মামলার প্রসঙ্গ। নেতাই গণহত্যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ ও রাজ্যসভা মুখ্য সচেতক সুখেন্দু শেখর রায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই নেতাই ঘটনায় আজ পর্যন্ত ঠিক কতজনকে গ্রেপ্তার করেছে, কতজন সাক্ষী রয়েছে এবং কতজনের থেকে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে, সেই সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত জবাব চান তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় সুখেন্দু শেখর রায়ের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং লিখিত জবাবে জানান, ২০১১ সালে লালগড় থানার অধীনে নেতাইয়ে ৯ জন গ্রামবাসীর শোচনীয় মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে লিখিত জবাবে উল্লেখ করা হয়। নেতাই মামলায় মোট ১১৫ জন সাক্ষী রয়েছেন, এবং এখনও পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে মাত্র ২৬ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘নেতাই কাণ্ডে গত ১১ বছরে সিবিআই ১১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ২৬ জন সাক্ষীর বয়ান নথিভুক্ত করতে পেরেছে। কত য়ে করিৎকর্মা সিবিআই এই তদন্তই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ।’
উল্লেখ্য, এই নিয়ে সংসদীয় শীতকালীন অধিবেশনে পরপর দুদিন তৃণমূলের দুই সাংসদ লোকসভা ও রাজ্যসভায় সরব হলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে। গতকাল তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মালা রায় প্রশ্ন তুলেছিলেন সাংসদ বিধায়কদের বিরুদ্ধে গত পাঁচ বছরে কতগুলি কেস সিবিআই দাখিল করেছে তা নিয়ে। মালা রায়ের সেই প্রশ্নেরও লিখিত জবাবে জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছিলেন, দেশে শেষ পাঁচ বছরে সিবিআই ৫৬ জন বিধায়ক-সাংসদের বিরুদ্ধে কেস দাখিল রয়েছে। তার মধ্যে ২২টি মামলার চার্জশিট গঠন হয়েছে। সেই ৫৬টি মামলার তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি মামলাও। মালা-ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন। আজ কুখ্যাত নেতাই কাণ্ড প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের ভূমিকার সমালোচনা করলেন সুখেন্দু শেখর রায়। এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, ‘১১ বছর আগে যখন রাজ্যে নেতাই কাণ্ড হয়, তখন কেন্দ্রে ছিল না বিজেপি সরকার। তা-ই সেই সময় সিবিআই কী তদন্ত করেছে তা নিয়ে কিছু মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কিন্তু মোদি জমানায় রাজ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অধীনে যতগুলি তদন্তপ্রক্রিয়া সাধিত হয়েছে তাতে সাফল্যের হার যথেষ্টই।’