লখনউ: উত্তরপ্রদেশের হাথরসের গণধর্ষিতা তরুণীর অটোস্পি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই ফের চাঞ্চল্য ছড়াল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, হাথরাসের মৃত তরুণী ধর্ষিতা হননি। ২০ বছরের ওই তরুণীকে গলা টিপে মারার চেষ্টা হয়েছিল। তার মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত লেগেছিল। কিন্তু ‘ফাইনাল ডায়গোনসিস’-এ দেখা যাচ্ছে, তিনি ধর্ষিতা হননি। দিল্লির এক হাসপাতালে ওই তরুণী মারা যান। সেই হাসপাতাল থেকেই পাওয়া গিয়েছে অটোপ্সি রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে বলে জাতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর।
এদিকে রাহুল গান্ধি ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধি হাথরসের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর যেমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা গান্ধি-সহ কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের প্রতিনিধি দলের কনভয় হাথরসের পথে আটকে দেওয়া হল। রাহুল প্রিয়ঙ্কাকে যেখানে আটকানো হয়েছে, সেখান থেকে হাথরসের দূরত্ব প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কনভয় গ্রেটার নয়ডায় আসতেই আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু নাছোড় রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও। তাঁরা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে হাথরসের দিকে দিল্লি উত্তরপ্রদেশ হাইওয়ে ধরে হেঁটেই রওনা দিয়েছেন।
उत्तर प्रदेश में अत्याचारी भाजपा सरकार द्वारा रोके जाने के बाद, कांग्रेस का प्रतिनिधिमंडल श्री @RahulGandhi और श्रीमती @priyankagandhi के नेतृत्व में हाथरस की तरफ पैदल कूच कर चुका है।#JusticeForIndiasDaughters pic.twitter.com/rdC29EMmzG
— Congress (@INCIndia) October 1, 2020
এদিকে হাথরসের পরিবেশ এখনও থমথমে। গণধর্ষণের তদন্ত কাণ্ডে গঠিত সিট নির্যাতিতার পরিজনদের সঙ্গে কথা বলতে গ্রামে গিয়েছে। গোটা এলাকায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তা রয়েছে। হাথরসে সংবাদমাধ্য়মকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। পরপর ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় যোগীরাজ্যে প্রশাসন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশে আরও এক গণধর্ষণ ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় চলছে। উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ওইদিন চার দুষ্কৃতীর দ্বারা ধর্ষিত হন তরুণী। তাঁকে মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরের দিন তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলিগড়ের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে শেষমেশ হার মানেন তরুণী। ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনকে পরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হাথরাস থানার ওসিকে বদলি করে পুলিশ লাইনস-এ পাঠানো হয়। নিগৃহীতার বাড়িতে পাহারারও বন্দোবস্ত করা হয়।
বুধবার সকালে ঘটনার তদন্তের জন্য স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠন করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। গঠিত তিন সদস্যের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিমকে যত তাড়াতাড় সম্ভব তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। কোনও ভাবেই দোষীরা যাতে রেয়াত না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মামলার শুনানি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে হবে।
এদিকে এই ঘটনায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি, ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি-সহ বিদ্বজনেরা সরব হয়েছেন। তারা উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও যোগী আদিত্যনাথ সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন। টুইট করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করেছেন উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধি।
He had just been telling me that all he wanted was justice for his child. Last night he was robbed of the chance to take his daughter home for the last time and perform her last rites. 2/3
— Priyanka Gandhi Vadra (@priyankagandhi) September 30, 2020
যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, হাথরাস গণধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের ছাড়া হবে না। এই ঘটনায় যে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে, তারা আগামী সাতদিনের মধ্যে আমাকে রিপোর্ট জমা দেবে। যাতে তাড়াতাড়ি বিচার হয়, তার জন্য এই মামলার শুনানি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে হবে। তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছে। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।