রায়গঞ্জ: শ্মশানে চিতা থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তে পাঠাল পুলিশ। জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ থানার গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিয়া সংলগ্ন বর্মন পাড়ার বাসিন্দা ৭০ বছরের বৃদ্ধা গোলাপি বর্মনের দেহ বাড়ি সংলগ্ন এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়। বাড়ির লোকজন কাউকে কিছু না জানিয়ে স্থানীয় হাতিয়া শ্মশানে দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু খবর পেয়ে সোমবার সকালেই সেখানে পৌঁছে যায় পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
মৃত বৃদ্ধার মুখাগ্নির মুহূর্তে আচমকা পুলিশ দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় হকচকিয়ে যায় মৃতের পরিবার। মৃতার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। ক্রমশই পরিস্থিতি ঘোরাল হতে শুরু করে। পুলিশের তরফে জানানো হয়, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ময়নাতদন্ত করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু মৃতদেহের ময়নাতদন্ত না করেই পরিবারের তরফে দাহ করানো হচ্ছিল।
তবে স্থানীয় গ্রামবাসীদের বক্তব্য, মৃত বৃদ্ধার ছেলে বুধা বর্মন রবিবার রাতে টাকার জন্য মাকে মারধর করে। সোমবার সকালে বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে। মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই পরিবারের লোকজন দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সোজাসুজি শ্মশানে নিয়ে দাহ করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। শেষ মুহূর্তে পুলিশ পৌঁছোতেই সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। মৃতার ছেলে বুধা বর্মন জানায়, কলপাড়ে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছিলেন তার মা। সকালে মায়ের মৃত্যু হয়।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই বৃদ্ধার শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করলে আসল রহস্য উদ্ঘাটিত হবে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য দামোদর বর্মন বলেন, ‘আমরা চাই মৃতদেহ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আসল তথ্য উঠে আসুক।’ তবে ওই বৃদ্ধার একমাত্র বউমা আলো বর্মনকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সীমা মণ্ডল দাস জানান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত করতেই হবে। রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আকতার জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা যাবে।