নকশালবাড়ি: প্রায় একশো বছরের পুরোনো রাজবংশীদের রাজধারী গান বিলুপ্তির পথে। এই গানের আরেক নাম লঙ্কা গান। রামায়ণকথার ওপর ভিত্তি করে এই গান গাওয়া হয়। রামায়ণ কথা শুধুমাত্র পড়ার বা শোনার নয়, তা যে গানের মাধ্যমে অভিনয় করে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা যায় তা রাজবংশী ভাষায় অভিনীত রাজধারী গানের পালা দেখলেই জানা সম্ভব।
এক সময় নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, মাটিগাড়া, শিলিগুড়ি, বিহারের ঠাকুরগঞ্জ, নেপালের বিভিন্ন জনজাতির মধ্যে রাজবংশী ভাষায় অভিনীত রাজধারী গান খুবই জনপ্রিয় ছিল। ১৯২৫ সালে খড়িবাড়ি ব্লকের ওয়ারিশ জোতের বাসিন্দা চৌরোঙ্গী ঠাকুর এই রাজধারী গানের প্রতিষ্ঠাতা। ১২১ বছর বয়সে তিনি মারা যান। এলাকার ১০ জন শিল্পীকে নিয়ে তিনিই প্রথম রাজধারী বা লঙ্কা গান তৈরি করেন। বর্তমানে রাজধারী গানে ২০ জন শিল্পী রয়েছেন। খড়িবাড়ি ব্লকের ওয়ারিশ জোতের ৭৬ বছর বয়সি ভোলা সিংহ আক্ষেপের সুরে জানান, নতুন প্রজন্ম এই গান শিখতে বা গাইতে চাইছে না। খড়িবাড়ি প্রসাদু জোত এলাকার বাসিন্দা নরেন্দ্রনাথ সিংহ জানান, তিনি গানে হনুমানের চরিত্রে থাকেন। যে কাঠের মুখোশ পড়ে থাকতে হয় তার ওজন প্রায় ১৩ কেজি। নাটক চলাকালীন এটা দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পড়ে থাকতে হয়। নতুন প্রজন্ম এতে আগ্রহ হারিয়েছে। তাই ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে বসেছে রাজধারী গানের সংস্কৃতি।