নয়াদিল্লি: এখনই বাজারে বিক্রির ছাড়পত্র পাচ্ছে না রামদেবের করোনা প্রতিরোধকারী ওষুধ। সবকিছু খতিয়ে দেখার পর তবেই মিলবে বাজারে বিক্রির ছাড়পত্র। বুধবার একথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আয়ুষমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক। অন্যদিকে, বিনা অনুমতিতে কোভিড ১৯ কিট তৈরির জন্য পতঞ্জলীকে নোটিশ দেবে উত্তরাখন্ড সরকার।
উল্লেখ্য, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই ব্যাপক হারে বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। দেশে এখনও পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ১৮৩ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭৬ জনের। সারা বিশ্বে প্রায় ৯৩ লক্ষ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকায় সব থেকে বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে প্রায় সাড়ে ২৩ লক্ষ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ২১ হাজার ২২৮ জনের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জিলিয়াড, মডার্ণা, সেরামের মতো ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি ভ্য়াকসিন তৈরির চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্য়ালয়ের গবেষকদের একটি দল দাবি করেছে, ডেক্সামেথাসন নামে একটি স্টেরয়েড ভেন্টিলেশনে থাকা করোনা আক্রান্তদের জীবন বাঁচাবে। এরই মাঝে রামদেবের মালিকানাধীন আয়ুর্বেদিক সংস্থা পতঞ্জলীর তরফে মঙ্গলবার ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘করোনিল’ ও ’শ্বাসরি’ নামে দু’টি ওষুধ বাজারে আনা হয়। সেই ওষুধে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে দাবি করা হয়। পাশাপাশি ওই ওষুধের ব্যবহারে সাতদিনের মধ্যেই করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে ঘোষণা করা হয়।
রামদেবের এই ঘোষণার পরপরই মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রক (আয়ুর্বেদ, যোগা ও ন্যাচুরোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথি)-এর তরফে পতঞ্জলীকে ওষুধ দুটির ব্যবসায়ীক প্রচার বন্ধ রাখতে বলা হয়। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের তরফে উত্তরাখন্ড সরকারের কাছে ‘করোনিল’ ও ‘শ্বাসরি’ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া ওই কোম্পানীর কোভিড ১৯-এর জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির লাইসেন্স ও প্রোডাক্ট অ্যাপ্রুভালের কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয় রাজ্য সরকারকে।
যদিও উত্তরাখন্ডের আয়ুর্বেদ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘পতঞ্জলীর তরফে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আবেদনপত্রে করোনা ভাইরাসের ওষুধ তৈরির কোনও উল্লেখ ছিল না। জ্বর ও সর্দি-কার্শির বিরুদ্ধে লড়তে ইমিউনিটি বুস্টার তৈরির জন্য পতঞ্জলীর তরফে আবেদন করা হয়েছিল। সেই ভিত্তিতে লাইসেন্স দেওয়া হয়। কিন্তু তারা যে কোভিড ১৯-এর কিট তৈরি করবে, সেটা জানায়নি। তারা কীভাবে কোভিড ১৯-এর কিট তৈরির অনুমতি পেল, সেটা জানতে চেয়ে ওই কোম্পানীকে নোটিশ দেওয়া হবে।‘
As per Patanjali's application, we issued them license. They didn't mention coronavirus, we only approved license for immunity booster, cough & fever. We'll issue them a notice asking how they got permission to make the kit (for COVID19): Licence Officer, Uttarakhand Ayurved Dept pic.twitter.com/I7CWKoJhbK
— ANI (@ANI) June 24, 2020
অন্যদিকে, ওষুধের নাম, কম্পোজিশন, কোথায় গবেষণা করা হয়েছে সেসব বিষয়ে পতঞ্জলীর কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় আয়ুষমন্ত্রক।
বুধবার কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক জানান, রামদেব ওষুধ তৈরি করেছেন ঠিকই, কিন্তু যেকোনও আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করতে হলে প্রথমে আয়ুষ মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর কাছে ওষুধ দুটির বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তারা রিপোর্ট পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে। সমস্ত রিপোর্ট ও ওষুধের কার্যকারীতা খতিয়ে দেখা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তবেই সেই ওষুধ বাজারে বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে।