বক্সিরহাট: রসিকবিল বনাঞ্চল সংলগ্ন পাগলীরকুঠির পাগলীর ধামে শুরু হল আদিবাসী সম্প্রদায়ের ১৯ দেবতার পুজো উৎসব। মূলত ওই এলাকার বনবস্তির রাভা সম্প্রদায়ের মানুষ এই পুজো উৎসব শুরু করলেও ওই ধামে ১৯টি দেবতার মধ্যে যেমন রয়েছেন কালী, শিব, মাসান, পাগলা, পাগলী, কালসুর, কামসুর তেমনি রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের পাগলাপীরের মূর্তি। সব মিলিয়ে প্রায় সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতীক হিসেবে ১৯টি দেবতার মূর্তি সাতদিন ধরেই পূজিত হবেন। এ বিষয়ে জানান পুজো কমিটির সহ সম্পাদক কান্তেশ্বর রাভা।
সাতদিন ধরে ১৯টি দেবতার প্রতীক হিসেবে ১৯টি বাঁশকে সাজিয়ে বাজনা সহ ৫০ জনের একটি দল সাতটি গ্রামে ঘুরে মাগন তুলবে। ২৯ জানুয়ারি শেষ দিনে পুজোর অঙ্গ হিসেবে সেখানে পাঁঠা, কবুতর, হাঁস বলি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে একটি ভেলায় করে ওই ১৯টি বাঁশের সঙ্গে একটি জ্যান্ত ছাগল বেঁধে তা রায়ডাক নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। সেই উপলক্ষ্যে প্রতিবছর ধাম এলাকায় একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আশপাশের সমস্ত গ্রাম অঞ্চল থেকে মানুষেরা মানত করতে ওই পুজোতে অংশগ্রহণ করেন। শনিবার বাঁশ নৃত্যের মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা হয়। পুজো শেষে প্রসাদ খেয়ে সুসজ্জিত পোশাকে ৫০ জনের একটি দল বাঁশ কাঁধে নিয়ে বাজনা নিয়ে মাগনের উদ্দেশ্যে বের হন। রাভা সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই পুজোর সূচনা করলেও বর্তমানে গ্রামের সমস্ত মানুষই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকেন।
কান্তেশ্বর রাভা বলেন, ‘১৯৬০ সালে বাবুই রাভা, দুর্লভ রাভা, কাশীনাথ রাভা প্রমুখেরা তান্ত্রিক মতে প্রথম ওই পুজোর শুরু করেন। প্রথমে ওই পুজোর কোনও দেবতার মূর্তি ছিল না। ১৯টি দেবতার প্রতীক হিসেবে ১৯টি বাঁশকে পুজো করা হত। পরবর্তীতে তাদের অনুপস্থিতিতে তান্ত্রিক না পাওয়ায় পুরোহিত মতে ১৯টি দেবতার মূর্তি তৈরি করে পুজো করা হয়।