প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার : আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ মাঝেরডাবরি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন চেকো নদী থেকে কয়েকবছর ধরে অবৈধভাবে বালি তুলে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। রয্যালটি ছাড়াই বালি লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ। ভোর পাঁচটা থেকে রাত পর্যন্ত নদী থেকে বালি তোলা চলছে। ট্র্যাক্টরে বালি তুলে তা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। গ্রামবাসীদের একাংশ এই অবৈধ কারবারের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। প্রশাসন বিষয়টি জানা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ করছে না বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে, ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তর জানিয়েছে, এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
চেকো নদীতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কয়েকটি ট্র্যাক্টর চেকো নদীর চরে দাঁড়িয়ে আছে। আর দশ-বারো জন যুবক বালি ট্র্যাক্টরে তুলছেন। সারাদিনই তাঁরা নদী থেকে বালি তুলছেন। এ কারণে এলাকায় ট্র্যাক্টরের যাতায়াত লেগেই থাকে সবসময়। এভাবে নদীর চর থেকে মাটি লুটের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের নজরদারির অভাবকেই দায়ী করেছেন। নদীর একপাশ থেকে বালি তোলার ফলে নদীর পাড়ভাঙন বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেক বাসিন্দাই। এছাড়া সারাদিন ধরে বালি বোঝাই ট্র্যাক্টরের যাতায়াতের ফলে ধুলোর সমস্যায় নাজেহাল বাসিন্দারা।
দক্ষিণ মাঝেরডাবরিতে রাস্তার পাশেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিদ্যালয়ে কোনো সীমানাপ্রাচীর নেই। বিদ্যালয়ে সামনের রাস্তা দিয়ে যেভাবে বালি-মাটি বোঝাই ট্র্যাক্টর চলাচল করে তাতে শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে চিন্তায় থাকেন অভিভাবকরা। এর আগে অবৈধভাবে বালি তোলার অভিযোগে প্রশাসন থেকে ট্র্যাক্টর আটক করা হয়েছিল বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আইনের তোয়াক্কা না করে নদীর চর থেকে অবৈধভাবে বালি-মাটি তুলে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ। দিনের পর দিন এমনটা চললেও প্রশাসন কেন কোনো পদক্ষেপ করছে না? সেই প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা।
এ বিষয়ে মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বুবুন রায় বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে বালি তোলা রুখতে পদক্ষেপ করা হয়েছিল। ট্র্যাক্টর আটকানোর চেষ্টাও করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এ বিষয়ে ডিএলএলআরও দীপঙ্কর পিপলাইকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। মেসেজ করেও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিএলএলআরও সন্দীপন মুখোপাধ্যায় বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।