দেবদর্শন চন্দ, কোচবিহার : কোচবিহার শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের যমুনাদিঘির পাড়ে সৌরবাতি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। আশপাশের গলিতে দুএকটি বাতি থাকলেও দিঘির কাছে থাকা বাতি জ্বলছে না। অন্ধকারের সুযোগে দিঘির পাড়ে সমাজবিরোধীদের আনাগোনা দেখা দিচ্ছে। শীঘ্র যমুনাদিঘির পাড়ে সৌরবাতি ঠিক করার দাবি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
কোচবিহার শহরের যমুনাদিঘি লম্বাদিঘি নামেও পরিচিত। বীরেন কুণ্ডু কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন একবার এই দিঘির সংস্কার করা হয়েছিল। সেসময় কোচবিহার দক্ষিণ-এর বিধায়ক ছিলেন অক্ষয় ঠাকুর। তাঁর বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে যমুনাদিঘির ধারে সৌরবাতি বসানো হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ওই পথবাতি খারাপ হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় সৌরবাতির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছে। সংস্কারের অভাবে দিঘিটিও এখন বেহাল দশায় রয়েছে। দিঘির পাড়ে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সেজন্য সৌরবাতি ঠিক করার পাশাপাশি দিঘিটি সংস্কারের দাবিও উঠেছে।
শহরের অন্য দিঘির মতো যমুনাদিঘিটিও রাজ আমলে খনন করা হয়েছিল। কিন্তু দখলদারির জেরে বর্তমানে দিঘিটির জায়গা ক্রমশ কমে আসছে। পাশাপাশি, দিঘিতে এবং সংলগ্ন এলাকায় প্লাস্টিক, থার্মোকল, গৃহস্থালির আবর্জনা ফেলা হয়। এতে দিঘির জল দূষিত হয়ে পড়ছে। দিঘি চত্বর দীর্ঘদিন সাফাই না করায় জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। ফলে সন্ধ্যা নামলেই মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে। পরিবেশপ্রেমীরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিক, থার্মোকল দিঘিতে ভাসানোর ফলে দিঘির বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট হচ্ছে। দিঘির জলে অবাধে জামাকাপড় ধোওয়া, আবর্জনা ফেলাও এর কারণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, দিঘি চত্বরে সৌরবাতি খারাপ থাকায় এলাকায় সন্ধ্যার পর অনেক সময়ই সমাজবিরোধীদের আনাগোনা দেখা যায়। এর ফলে এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দিঘিটিও এখন অভিভাবকহীন। অনেকেই খাবারের অবশিষ্টাংশ এমনকি প্লাস্টিক দিঘি চত্বরে ফেলে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিং বলেন, সৌরবাতি বসানোর পর কয়েক বছর কেটে গিয়েছে। রাতে কিছু মানুষ সে সব চুরি করছে। বিষয়টি শীঘ্র দেখা হবে। পুরসভার তরফে বাতি লাগিয়ে দেওয়া হবে। মানুষের সচেতনতার অভাবেই দিঘিতে এবং দিঘি সংলগ্ন এলাকায় আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।