ভারত – ২৮৭/৬
দক্ষিণ আফ্রিকা – ২৮৮/৩
পার্ল : ভারতীয় শিবিরের উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়ে ওডিআই সিরিজেও দখল দক্ষিণ আফ্রিকার। টেস্টের পর ৫০-৫০ ফর্ম্যাটে ভরাডুবিতে হতাশার অন্ধকার টিম ইন্ডিয়ায়।
বুধবার প্রথম ওডিআই ম্যাচের ফলাফলেই অশনিসংকেত। এদিন সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও ভুলের পুনরাবৃত্তি। ২০১৮-র সফরে ডুপ্লেসি-ডিভিলিয়ার্সদের ৫-১ ব্যবধানে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। আজ সেখানে টেম্বা বাভুমার তরুণ ব্রিগেডের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ!
ঋষভ, লোকেশ, শার্দুলদের ব্যাটিং দাপট রসদ জোগালেও, নির্বিষ ভারতীয় বোলিং সেই চেষ্টায় জল ঢেলে দেয়। কুইন্টন ডিকক (৭৮), জানেমান মালানরা (৯১) যা কাজে লাগিয়ে অনায়াস জয়ের স্ক্রিপ্ট লিখলেন। ২৮৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তাঁরা ১৩২ রানের ওপেনিং জুটিতে ভিত গড়ে দেন। এরপর লক্ষ্যে পৌছোতে সমস্যা হয়নি। শেষপর্যন্ত ৭ উইকেটে ভারত-বধে ম্যাচ ও সিরিজে কবজা।
বুমরাহ-চাহালরা শেষদিকে জোড়া ধাক্কায় আশার কিরণ দেখালেও আলেয়ার মতো দ্রুত তা মিলিয়ে যায়। এইডেন মার্করাম (৩৭), ভ্যান ডার ডুসেনরা (৩৭) আর কোনও সুযোগ দেননি। ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে সিরিজ জয়ের উল্লাস প্রোটিয়া শিবিরের। প্রথম বিদেশ সফরেই ব্যর্থতার হতাশা হেডস্যার রাহুল দ্রাবিড়ের চোখেমুখে। রবিবারের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচ। ভারতের জন্য যা মুখরক্ষার, হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ডুয়েল।
লোকেশ রাহুল টসের সময় বলেছিলেন, বড় স্কোর তুলে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে চান। যদিও ২৮৮-র লক্ষ্যে খেলতে নেমে চাপ বুঝতেই দেননি ডিকক-মালান। দুরন্ত উইকেটকিপিংয়ে পর ব্যাট হাতেও ভরসা জোগান ডিকক। একটাই সুযোগ, অশ্বীনের বলে ডিককের (৩২ রানে খেলছিলেন তখন) স্টাম্পিং মিস ঋষভের। তিননম্বর ওডিআই হাফ সেঞ্চুরির পর মালান থামেন ৯১-এ। কার্যত দুজনের দাপটেই ইতি পড়ে যায় ভারতের যাবতীয় আশায়।
অথচ, ভারতের টস জয় থেকে লোকেশ-ধাওয়ানের ওপেনিং জুটি, শুরুটা খারাপ হয়নি। বুধবার কামব্যাক ম্যাচে সফল ধাওয়ান। আজ শুরু সেখান থেকেই। ৮ রানে জীবন পাওয়া লোকেশও ক্রমশ জাঁকিয়ে বসেন। কিন্তু প্রোটিয়া ব্রিগেডের স্পিন-স্ট্র্যাটেজির সামনে আবারও আটকে যাওয়ার ছবি। ব্রেক থ্রু মার্করামের হাত ধরে। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়ে যান শিখর (২৯)। পরের ওভারে সাজঘরের পথে বিরাট কোহলিও (০)।
ক্রিজে লোকোশের সঙ্গে ঋষভ। শুরু ঘুরে দাঁড়ানো। অহেতুক ঝুঁকি না নিয়ে ব্যাটিং-বিক্রমে ভারতীয় ইনিংসের গতি বাড়িয়ে দেন ঋষভ। স্পিনার সামসির ওপর বেশি নির্দয় ছিলেন। শেষপর্যন্ত ১১৫ রানের জুটি ভাঙে লোকেশের ভুল শটে। মার্কো জানসেনকে বিশ্রাম দিয়ে এদিন অভিষেক ঘটে সিসান্দা মাগালা-র। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লোকেশের (৫৫) ফিরিয়ে উইকেটের খাতা খোলেন। আট বল বাদে ঋষভও (৮৫) প্যাভিলিয়নমুখো। তাবরেজের (২/৫৭) পরবর্তী শিকার শ্রেয়স (১১)।
ঋষভদের সৌজন্যে তৈরি তিনশো প্লাস রানের সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায় পরপর তিন উইকেট খুইয়ে। বেঙ্কটেশের (২২) আউটের কৃতিত্বটা ডিককের। বিদ্যুৎ গতিতে স্টাম্পিং। গত ম্যাচে ঋষভকে এভাবেই ফিরিয়েছিলেন। আজ বেঙ্কটেশের পালা। শেষদিকে, শার্দুল ঠাকুর (৪০) আর রবিচন্দ্রন অশ্বীনের (২৫) ৩৭ বলে ৪৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি ২৮৭/৬ স্কোরে পৌঁছে দিলেও, সিরিজ হার এড়ানো যায়নি।